নারায়ণগঞ্জে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না হওয়ায় ডা. জাফরুল্লাহর ক্ষোভ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদের সার্বিক অবস্থা ঘুরে দেখেন। ছবি: সংগৃহীত

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘এতোগুলো কাঁচ ভেঙে গিয়েছে, মানুষ পুড়ে গেছে, তার মানে এখানের বিস্ফোরণটা ভয়াবহ ছিল। আমাদের দেশে এটাই একমাত্র ঘটনা না, প্রায়ই ঘটছে। একটা দুঃখের বিষয় হলো, এখানে যে চিকিৎসাটা হওয়া উচিত ছিল সেটা হয়নি। এতো বড় একটা জেলা শহর, এতো বড় হাসপাতাল, এখানে উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে ব্যাথানাশক ইঞ্জেকশন দেয়া। তাহলে ব্যাথাটা থাকতো না।’

রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে তিনি মসজিদের সার্বিক অবস্থা ঘুরে দেখেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা ও ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন।

গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ৩৯ জন দগ্ধ হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত থেকে রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দুর্ভোগ্য যে, আমি দেখলাম আমাদের ঢাকায়ও পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। অথচ এ ওষুধের দাম খুব বেশি না। একটা ইঞ্জেকশন ৩৫ টাকা। সরকার চাইলে এটা আরও কমতে পারে। আমার কষ্ট লেগেছে, এখান থেকে ঢাকায় যেতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এই যে কষ্টটা এটি অকল্পনীয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার আরও একটু সর্তক হলে, আরও একটু ব্যবস্থা নিলে, অনেক কম লোক মারা যেত।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভুল ভ্রান্তি অন্যের ঘাড়ে চাপাতে ভালোবাসি নাশকতার কথা বলে। এটা আমাদের ব্যর্থতা এখানে একটা মসজিদের লাইনের বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থা না নেওয়া। যারা মারা গেছে আমি মনে করি এটাতে আমাদের সরকারের বিরাট ব্যর্থতা। সরকার এটা ঘটায়নি কিন্তু এটি তাদের ব্যর্থতা। তারা প্রত্যেক সময়ে অর্ধেক কাজ করে রেখে দেন। আজকে তারা যদি সর্তক থাকতো তাহলে অর্ধেক লোক মারা যেতো না। অর্ধেক লোক শান্তি পেতো এখানে চিকিৎসা পেয়ে।’

দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তিতাসের গ্যাস সম্পর্কে খালি আলোচনা হবে, পরীক্ষা হবে, এসব কথা না বলে যেভাবে মেজর সিনহার ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে বিচার শুরু হয়েছে, এটারও সাত দিনের মধ্যে বিচার শুরু হওয়া উচিত যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে।’

ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন তাদের প্রত্যেক পরিবারকে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত। তাদের পরিবারকে নূন্যতম ক্ষতিপূরণ দেয়া নৈতিক দায়িত্ব।

প্রত্যেক জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালুর দাবিতে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগেরও একটা ব্যর্থতা আছে। প্রত্যেক জেলা হাসপাতালে পোড়া রোগীর জন্য বার্ন ইউনিট হওয়া প্রয়োজন। এটি খুব সহজ কাজ। দুই দিনের মধ্যে যে কোন ডাক্তারকে খুব ভালোভাবে ট্রেনিং দেয়া যায় এবং এর খরচও বেশি না। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় তাদের সব হাসপাতালে অন্তত দুইজন করে দুই থেকে তিনদিনের ট্রেনিং দিয়ে সেটা খুব সহজে করা যায়।’

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank governor Ahsan H Mansur's remarks

Bangladesh in ‘intensive discussion’ with UK to recover laundered money: BB governor

Mansur said Bangladesh had requested mutual legal assistance from several countries, including the UK

1h ago