করোনায় ৮২ শতাংশ পোশাক শ্রমিকের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত: সানেম

RMG
স্টার ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস সংকট দেশের কমপক্ষে ৮২ শতাংশ পোশাক শ্রমিকের জীবিকার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে বলে সোমবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে।

যৌথভাবে এ সমীক্ষা পরিচালনা করেছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও মাইক্রো ফাইন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও)।

চলমান কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব সম্পর্কে জরিপে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করা হলে তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ জানিয়েছেন যে এই মহামারি তাদের জীবিকার ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি।

দেশের পোশাক শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মূল্যায়ন করতে সানেম এবং এমএফও গত ১৫ সপ্তাহে এক হাজার ৩৬৭ জন শ্রমিকের ওপর ধারাবাহিকভাবে জরিপ চালিয়েছে। সিরিজ এই জরিপে প্রতি সপ্তাহে নতুন প্রশ্ন যোগ করা হয়। সর্বশেষ জরিপে এক হাজার ২৬৯ শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।

জরিপে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত রয়েছেন, যাদের তিন-চতুর্থাংশ নারী যা পুরো পোশাক খাতের লিঙ্গ বণ্টনের প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সর্বশেষ জরিপে শ্রমিকদের আয়, আয়ের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং আয়ের ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে তথ্য উঠে এসেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

জরিপে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের ওপর কোভিড-১৯ সংকটের প্রভাব নিয়ে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সমীক্ষায় ৫১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন যে মহামারির আগে তারা পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন। নারীদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ ও পুরুষদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ একই কথা জানিয়েছেন।

কোভিড-১৯ এর আগে যারা পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন তাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। আর ৩৩ শতাংশ মাঝে মধ্যে এবং ৯ শতাংশ কদাচিৎ টাকা পাঠাতেন। করোনা সংকটের আগে যে ৫১ শতাংশ শ্রমিক পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন তাদের মধ্যে ১৮ শতাংশ এখন আর পরিবারের কাছে টাকা পাঠান না।

এছাড়া ৫৮ শতাংশ তাদের পরিবারে আগের চেয়ে কম টাকা বা আগে যতবার পাঠাতেন তার চেয়ে কমবার পাঠানোর কথা জানান। ২২ শতাংশ জানিয়েছেন কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো অর্থের পরিমাণের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি।

সানেম এবং এমএফও’র যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এ জরিপগুলো ‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ ও উৎপাদক দেশগুলোতে নিয়োজিত শ্রমিকদের শ্রমঘণ্টা, আয়, ব্যয় এবং অন্যান্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নিয়মিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সরকারী নীতি, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া আদায় এবং কারখানা ও ব্র্যান্ডের মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত করা।

আন্তর্জাতিক সংস্থা মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিজের উদ্যোগে বাংলাদেশ, ভারত ও কম্বোডিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৬ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়। ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচটি উৎপাদক দেশের শ্রমিকদের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সেগুলো প্রকাশ করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

40m ago