ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলায় জড়িতদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর বর্বরোচিত ও জঘন্য হামলার কারণ ও এর পেছনের মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে একাদশ সংসদের নবম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তৃতা করেন (বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০)। ছবি: পিআইডি

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর বর্বরোচিত ও জঘন্য হামলার কারণ ও এর পেছনের মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

আজ বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন-উত্তর পর্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের (সংসদ সদস্যদের) বলতে পারি যে এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, সেই সব অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি হবে এবং আমি এর নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এর পেছনে মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। এই ঘটনার তদন্তে কোন ধরনের ত্রুটি নেই। এর সুষ্ঠু তদন্ত হবে।’

এ সময় হারুন ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলার ঘটনা তদন্তের জন্য ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটির মতো একটি কমিটি গঠন করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। কারণ স্থানীয় তদন্ত কর্মকর্তারা যথাযথ তদন্ত করতে পারবে না বলে তার সন্দেহ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমার দৃষ্টিতে অপরাধীর একমাত্র পরিচয় সে একজন অপরাধী। আমি কখনোই অপরাধী কোন দলের তা দেখব না। এমনকি তারা যদি আমার দলের সদস্যও হয়, তবুও আমি তাদের রেহাই দেব না এবং আমি এই আদর্শ নিয়েই চলছি। আপনারা (সংসদ সদস্য) ইতোমধ্যেই এটা বুঝেছেন।’ ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্তের পর আরও অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে ধারণা করছেন যে এটি একটি চুরির ঘটনা। এই ঘটনার সাথে জড়িত প্রত্যেকটি বিষয়ে যথাযথভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের আশ্রয় দেয়া বা রক্ষা না করার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘যারা অপরাধ করে ও যারা অপরাধীদের রক্ষা করে, উভয়ে সমান অপরাধী।’

সংসদ নেতা বলেন, ইউএনও ওয়াহিদাকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা নিয়ে আসা হয় এবং তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসস্থানে এই হামলায় ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলী গুরুতর আহত হন।

ওয়াহিদা এখন ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনার পরদিন (শুক্রবার) র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসাদুল হক ও তার দুই সাথী নাবিউল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে। দিনাজপুরের একটি আদালত তাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলার ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগের লোকদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দলের নেতাকর্মীদের দোষ দেয়া ঠিক না। করোনা ভাইরাস, সাইক্লোন আমফান ও বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে তারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিএনপি সরকার ১৯৯১ সালের সাইক্লোনের পর দুর্গত মানুষের জন্য কিছুই করেনি।

পিছনের ঘটনা টেনে না আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি হারুনের আবেদন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষত্যের পথ বেছে নিতে হবে।’

বগুড়া- ৬ আসনের বিএনপি দলীয় এমপি গোলাম মোহম্মদ সিরাজের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ওয়াহিদার উপর হামলার ঘটনায়ও এর ব্যতিক্রম হবে না। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাকে ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দায়মুক্তি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি দেশের ৫০০টি স্থানে একই সাথে বোমা হামলা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago