করোনাকালে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাখাতকে কোভিড-১৯ এর কারণে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র উল্লেখ করে চলমান করোনাভাইরাস সঙ্কটের সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সম্মিলিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারভিত্তিক এডুকেশন এভাব অল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাখাতকে কোভিড-১৯ এর কারণে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র উল্লেখ করে চলমান করোনাভাইরাস সঙ্কটের সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সম্মিলিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গভীরভাবে প্রভাবিত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য একটি সম্মিলিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী আজ এই প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ‘শিক্ষাকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে একটি ভিডিওবার্তায় একথা বলেন।

এই দিবসটি শিক্ষার ওপর হামলার ইস্যুতে আলোকপাত এবং সংঘাত-আক্রান্ত দেশগুলোতে আরও প্রান্তিক শিশু ও যুবকদের মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ পেতে সহায়তা করার লক্ষ্যে পালিত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা তার রেকর্ডকৃত বার্তায় একই সঙ্গে প্রতিটি পরিস্থিতিতে শিক্ষা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পুনর্নির্মাণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টা অবশ্যই বিভিন্ন দেশকে কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘এই শুভ উপলক্ষে, আসুন প্রত্যেক পরিস্থিতিতে শিক্ষাখাত রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নতুন করে জোরদারের অঙ্গীকার করি। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অবশ্যই আমাদের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও কোভিড-১৯ সঙ্কট বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা দেখিয়েছে, তবু বাংলাদেশ শিক্ষা খাতে মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমরা বসে থাকিনি। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এবং অনলাইন পাঠদান চালু করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে এবং অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনায় নিযুক্ত থাকে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার শিক্ষাব্যবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করায় এই ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে দেশের উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিচালিত হয়ে আমরা শিক্ষায় ব্যাপক বিনিয়োগ করেছি।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা শিক্ষার উন্নতি এবং বিশেষ প্রয়োজন-সম্পন্ন শিশুসহ প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সরকার ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করছে এবং উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত ২০.৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনা বিনামূল্যে করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ হাজার ১৯৩টিরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৮৫টি উচ্চবিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং ৪ হাজার ৩৬১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মাসিক বেতন আদেশের (এমপিও) আওতায় আনা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, লিঙ্গ-সংবেদনশীল পন্থা, স্কুলে খাওয়ানো কর্মসূচি, প্রায় প্রতিটি গ্রাম ও ওয়ার্ডে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, আইসিটি শিক্ষার মতো অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি এই সমস্ত পদক্ষেপের সুস্পষ্ট সুফল দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ফলস্বরূপ, ২০১৯ সালে প্রকৃত শিক্ষার্থী ভর্তির হার ৯৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং স্বাক্ষরতার হার ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকীকরণেও পদক্ষেপ নিয়েছে।

বক্তৃতার শুরুতে, তিনি আক্রমণ থেকে শিক্ষাকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষে সকলকে অভিনন্দন জানান এবং এডুকেশন এভাব অল ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) অ্যাডভোকেট শেখা মোজা বিনতে নাসেরের প্রশংসা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber Security Agency exists only in name

In December 2018, when the Digital Security Agency was formed under the Digital Security Act, it was hoped that the cybersecurity of important government sites with critical citizen data such as the Election Commission’s national identity database and the Office of the Registrar of Birth and Death  would be robust.

8h ago