সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ৫ বিষয়ে একমত ভারত ও চীন

হিমালয় সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে নতুন করে সমঝোতায় পৌঁছেছে চীন ও ভারত।
ছবি: সংগৃহীত

হিমালয় সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে নতুন করে সমঝোতায় পৌঁছেছে চীন ও ভারত।

আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মস্কোতে কূটনৈতিক পর্যায়ের এক বৈঠকের পর সীমান্তে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই দেশ।

দুই দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাঁচটি বিষয়ে একমত হয়েছেন। এগুলোর মধ্যে আছে সীমান্তে সম্মুখসারির সেনা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সব চুক্তি ও প্রোটোকল মেনে চলা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করা এবং উত্তেজনা তৈরি করে তুলতে পারে এমন সব কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই দেশের  বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি কোনও দেশেরই কাম্য না। উভয় পক্ষের উচিত সেনাদের দ্রুত নিষ্ক্রিয় করে সীমান্তে উত্তেজনা কমানো।

বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একমত হয়েছেন যে সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি কোনো পক্ষের জন্যই লাভজনক নয়। তাই, চীন ও ভারত উভয়েরই সামরিক পর্যায়ে বৈঠকের ভিত্তিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মোতায়েন করা অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে দুই পক্ষের সেনা ঘাঁটির মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে আলাদাভাবে একটি বৈঠকে বসেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ওয়াং ওই বৈঠকে ‘অবিলম্বে গুলি চালানো ও দু’পক্ষের প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন হয় এমন বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে উস্কানিমূলক কাজ থামানো জরুরি’ বলে জয়শঙ্করকে জানিয়েছেন।

জয়শঙ্করকে তিনি আরও বলেন, সীমান্তে মোতায়েন করা অতিরিক্ত সেনা ও সরঞ্জামাদি সরানো উচিত।

রয়টার্স জানায়, ওয়াংয়ের এমন মন্তব্যের সঙ্গে চীনা সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের মিল নেই।

বুধবার, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সীমান্তে সেনা, বোমারু ও সাঁজোয়া যান পাঠিয়েছে।

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও সম্প্রতি তিব্বতে পিএলএর প্যারাট্রুপারদের সশস্ত্র জাম্প ড্রিলের খবর প্রকাশ করে।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে গ্লোবাল টাইমস জানায়, ভারতের সঙ্গে যে কোনো আলোচনায় ‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’ নিয়ে কথা বলা উচিত।

সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, ‘কূটনৈতিক বৈঠক ব্যর্থ হলে চীনকে অবশ্যই সামরিক পদক্ষেপ নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকতে হবে। চীনের সম্মুখভাগের সেনারা যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হয় এবং যে কোনও সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে সেই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

গ্লোবাল টাইমস আরও জানায়, ‘চীনের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে ভারতের অস্বাভাবিক আত্মবিশ্বাস আছে। ভারতের যথেষ্ট শক্তি নেই। ভারত যদি চরম জাতীয়তাবাদী শক্তি থেকে তার র‌্যাডিক্যাল চীনা নীতি অনুসরণ করে চলে, তবে সেটির জন্য চরম মূল্য দিতে হবে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতে পশ্চিম হিমালয়ের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারত ও চীনের মধ্যকার সংঘর্ষে ৪৫ বছর পর প্রথমবারের মতো গুলি চালানো হয়। চীন ও ভারত পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে একে অন্যকে শূন্যে গুলি চালানোর জন্য অভিযুক্ত করে।

এরপরই দুই দেশ তাদের সামরিক অবস্থান আরও মজবুত করতে মনোযোগী হয়। দুই দেশই প্যাঙগং লেক এলাকায় অতিরিক্ত সেনা ও ট্যাঙ্ক-সহ সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

27m ago