খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজকে রক্ষা করেন ট্রাম্প

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রক্ষা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সৌদি যুবরাজ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রক্ষা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গতকাল বব উডওয়ার্ডের প্রকাশিতব্য নতুন বই নিয়ে বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়। উডওয়ার্ডের বইয়ের একটি কপি হাতে পেয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।

সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডকে জামাল খাশোগি হত্যা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি কংগ্রেসের হাত থেকে তাকে (সৌদি যুবরাজ) রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমি তাদেরকে থামাতে পেরেছি।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে উডওয়ার্ডকে জানান, সৌদি যুবরাজ খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে হত্যাকাণ্ডটির নির্দেশনা সৌদি যুবরাজই দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর উভয় দলের আইনপ্রণেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মধ্যেই কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে প্রায় আটশ’ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেন ট্রাম্প। ওই অস্ত্র বিক্রি ঠেকাতে কংগ্রেস তিনটি প্রস্তাব পাস করলেও সেগুলোতে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইয়েমেনে সংযুক্ত আরব আমিরাত-সৌদি নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধে ‘ওয়ার পাওয়ার অ্যাক্ট রেজুলেশনে’ বাধা দেন।

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বব উডওয়ার্ডের নতুন বই ‘রেইজ’ প্রকাশিত হবে। বইটির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ১৮টি সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন উডওয়ার্ড।

বুধবার ট্রাম্পের কিছু বক্তব্যের অডিও রেকর্ড প্রকাশ হলে মার্কিন রাজনীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বব উডওয়ার্ড তার বইতে লিখেছেন, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম শেষে ফিরে আসার কয়েক দিন পর ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি তাকে ডেকে পাঠান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওই সময় আলোচনায় খাশোগির নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রেসিডেন্টকে চাপ দেন উডওয়ার্ড।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সৌদি রাজবংশের ক্ষমতাধরদের কড়া সমালোচনার জন্য আলোচিত ছিলেন সুপরিচিত এই সাংবাদিক।

তুর্কি কর্মকর্তারা জানান, পুলিশের ধারণা ৫৯ বছর বয়সী সাংবাদিক খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

বিচার শুরুর প্রথম দিনই তুরস্কে সৌদি দূতাবাসের টেকনিশিয়ান জেকি দেমি আদালতকে জানান, খাশোগি যে ভবনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, সেখানে তার প্রবেশের এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে একটি তন্দুর চুলা জ্বালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

‘সেখানে পাঁচ থেকে ছয়জন লোক ছিলেন... তারা আমাকে তন্দুর চুলা জ্বালাতে বলেন। বাতাসে আতঙ্ক ভেসে বেড়াচ্ছিল,’ বলেন তিনি।

২০ আসামি ও সৌদি কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতেই তুরস্কের আদালতে খাশোগি হত্যার বিচারকাজ চলছে।

ডিসেম্বরে ওই হত্যার দায়ে পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিন জনকে কারাদণ্ডের সাজা দিলেও গত ৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের একটি আদালত খাশোগি হত্যাকাণ্ডে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রত্যাহার করেন।

Comments

The Daily Star  | English

WB cuts FY25 growth forecast to 4 percent

The World Bank has slashed its forecast for Bangladesh’s economic growth by 1.7 percentage points to 4 percent due to “significant uncertainties following recent political turmoil” and “data unavailability”.

2h ago