ছোট সেতুর কারণে বড় সেতুর সুফল বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা

লালমনিরহাট-ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী সড়কে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি এলাকায় নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর কাঙ্ক্ষিত সুফল থেকে বঞ্চিত রয়েছেন স্থানীয়রা।
শেখ হাসিনা ধরলা সেতু (বামে) এবং রত্নাই নদীর উপর ছোট বেইলি সেতু (ডানে)। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট-ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী সড়কে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি এলাকায় নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর কাঙ্ক্ষিত সুফল থেকে বঞ্চিত রয়েছেন স্থানীয়রা।

ব্যবসা বান্ধব হয়ে অর্থনৈতিক সফলতার দ্বার উন্মোচন করতে পারেনি সেতুটি। বড় সেতুটির সার্বিক ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে আছে ছোট একটি বেইলি সেতু।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট এলাকায় রত্নাই নদীর উপর ছোট এই বেইলি সেতুটি ভেঙ্গে পরার উপক্রম হওয়ায় এর উপর দিয়ে হালকা যানবাহন ছাড়া পণ্য পরিবহনের জন্য বড় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে লালমনিরহাট সদর উপজেলা ও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ব্যবসায়ীরা ধরলা নদীর উপর শেখ হাসিনা ধরলা সেতু ব্যবহার করে মালামাল পরিবহন করতে পারছেন না। পিছিয়ে পড়ছেন এই চার উপজেলার ব্যবসায়ীরা।

শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর সার্বিক ব্যবহার এবং এর সুফল নিশ্চিত করতে এখনো কুলাঘাটে রত্নাই নদীর ওপর নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যত নেই কোনো ফলপ্রসূ ব্যবস্থা।

২০১৮ সালের ৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ধরলা নদীর উপর নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। সেদিন থেকে সাধারণ মানুষ এবং হালকা যানবাহন চলাচল করছে এই সেতু দিয়ে। কিন্তু পরোক্ষ কারণে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন ৯৫০-মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক আট মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ২০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, একমাত্র কুলাঘাটে রত্নাই নদীর ওপর থাকা বেইলি সেতুর কারণে ধরলা নদীর সেতুটি তারা ব্যবহার করতে পারছেন না। ‘আমরা পণ্য আনা নেওয়া করতে পারছি না। বড় সেতুটি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। সুযোগ থাকার পরেও আমরা ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছি।’

একই উপজেলার অপর ব্যবসায়ী এমদাদুল হক সরকার বলেন, ‘শেখ হাসিনা ধরলা সেতু ব্যবহার করতে না পারায় পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। দ্রুত কুলাঘাটে রত্নাই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুকে শতভাগ ব্যবহার উপযোগী করা হোক।’

লালমনিরহাট জেলা চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সিরাজুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কুলাঘাটে রত্নাই নদীর উপর নতুন একটি সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুকে সার্বিক ব্যবহার উপযোগী করলে এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। লাভবান হবে এ অঞ্চলের সামাজিক অর্থনীতি। সড়ক ও জনপথ বিভাগকে এ ব্যাপারে কয়েক দফায় বলা হলেও কোনো কাজে আসছে না।’

লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কুলাঘাটে রত্নাই নদীর উপর ১৩৮-মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু তৈরির জন্য ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট প্রোফর্মা) সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। কবে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে আমি সঠিক জানি না।’

তিনি জানান, তারা চেষ্টা করছে এ সেতুটির ডিপিপি দ্রুত অনুমোদন করাতে।

Comments

The Daily Star  | English
bd govt logo

25 districts including Dhaka get new DCs

Deputy commissioners were withdrawn from these districts on August 20

31m ago