পঞ্চগড় চিনিকল বন্ধের শঙ্কা শ্রমিক-কর্মচারীদের

লোকসানের কারণে পঞ্চগড় সুগার মিলস লিমিটেড বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিলটির শ্রমিক-কর্মচারীরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে চিনিকলটি আধুনিকায়ন করে সচল রাখার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকের সামনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার পঞ্চগড় চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন এই সভার আয়োজন করে।
সভায় বাংলাদেশ চিনি শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চগড় চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আনোয়ারুল হক এবং পঞ্চগড় চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমসহ ইউনিয়নের অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, লোকসানের কারণ দেখিয়ে সরকার দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে আটটি বন্ধ এবং সাতটি আধুনিকায়ন করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
তারা বলেন, পঞ্চগড় জেলার একমাত্র প্রাচীন ও ভারী শিল্পকারখানাটি বন্ধ হলে শুধুমাত্র শ্রমিক-কর্মচারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং এর সঙ্গে জড়িত কৃষকসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সামগ্রিকভাবে জেলার আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় ভীষণভাবে প্রভাব পড়বে। যাতে করে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে বলে মনে করেন তারা।
পঞ্চগড় সুগার মিলস লিমিটেডসহ অন্যান্য চিনিকলগুলোকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বহুমুখী দ্রব্যাদি উৎপাদনের উপযোগী করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা। সেই সঙ্গে সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করারও আহ্বান জানান বক্তারা।
পঞ্চগড় চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লোকসানের কারণে চিনিকলটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। যদি তাই হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত স্থায়ী ও মৌসুমিসহ মোট ৭৪৪ জন কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারী পরিবারসহ বিপদে পড়বেন। তাই আম,রা দ্রুত সরকারের উদ্যোগ কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, পঞ্চগড় চিনিকল প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে লোকসান গুনছে। চিনিকলটিতে স্থায়ী ও মৌসুমিসহ মোট ৭৪৪ জন কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছেন। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে (মৌসুমে) পঞ্চগড় চিনিকলে মোট দুই হাজার ৪১৪ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে আগের উৎপাদিতসহ মোট তিন হাজার ২৬৭ মেট্রিকটন চিনি অবিক্রিত রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে পঞ্চগড় চিনিকলে লোকসানের পরিমাণ ৪৮ কোটি টাকা। যেখান থেকে ২৮ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছে। চিনিকলটি চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৪৭০ কোটি টাকা লোকসানে রয়েছে বলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
Comments