ট্যাক্স দেবেন মিষ্টি খাবেন, যারা ট্যাক্স দেবেন না তারা ফাইন খাবেন: মেয়র আতিক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ট্যাক্স দেবেন মিষ্টি খাবেন, আর যারা ট্যাক্স দেবেন না, তারা ফাইন (জরিমানা) খাবেন।
Atiq-1.jpg
অনুমোদন নিয়ে নির্ধারিত মাপে সাইনবোর্ড স্থাপন করায় এক ব্যবসায়ীকে মিষ্টি খাওয়ান ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ট্যাক্স দেবেন মিষ্টি খাবেন, আর যারা ট্যাক্স দেবেন না, তারা ফাইন (জরিমানা) খাবেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গুলশান দুই নম্বর গোলচত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ইত্যাদি উচ্ছেদের সময় এক ব্যবসায়ী ডিএনসিসি থেকে আগেই অনুমোদন নিয়ে নির্ধারিত মাপে সাইনবোর্ড স্থাপন করায় মেয়র তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর পর এ কথা বলেন।

জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখা তাদের সাইনবোর্ডের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ায় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে মিষ্টি খাওয়ান।

পরিদর্শনকালে মেয়র বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব- এই শহর কিন্তু আমাদের, এই শহরে আমরা উপার্জন করি। আমাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করে, এই শহরে আমারা বড় হয়েছি। এ শহরকে ভালবাসতে হবে। যে ঘরে আমি থাকি সেই ঘরের প্রতি যদি মায়া না করি, যে ঘরে থাকি সে ঘরে যদি থুথু ফেলি, তাহলে হবে না। এই যে আজকে বড় বড় ডেভেলপাররা কীভাবে তাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিল, সিটি করপোরেশনকে কোনো ধরনের ট্যাক্স না দিয়ে। এই শহরে আপনাদের এত বড় বড় ব্র্যান্ডিং করবেন, আপনি ব্যবসা করবেন, আর সিটি কর্পোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোনো ট্যাক্স দেবেন না, এটি হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, শহরে কোনো ধরনের সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে, আগে দেখুন সিটি কর্পোরেশনের নিয়ম কী? বিদেশে তো আপনারা এরকম করতে পারবেন না। এদেশে কেন করবেন? এই দেশেরও গার্ডিয়ান আছে। জনগণ চায় সিটি পরিষ্কার থাকুক। জনগণ চায় তারা ফুটপাত দিয়ে যেন নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফুটপাত সড়কে অবৈধভাবে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী নিলাম করে দিচ্ছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজ সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি অপসারণ করছি। আমি জনগণকে অনুরোধ করব- আপনারা আমাদেরকে জানান। এরকম কোন কোন ফুটপাত ও রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী রেখে দেয়।’

মেয়র আরও বলেন, ‘এই শহরে তারা ব্যবসা করছেন, তারা কিন্তু ফিলানথ্রপি করছেন না। তারা ট্যাক্স দেবে না কেন? সিটিকে সুন্দর করতে গেলে সিটি করপোরেশনকে ট্যাক্স দিতে হবে। আজকে আমরা গুলশান, বনানী এবং প্রগতি সরণিতে অভিযান শুরু করেছি। বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন করার জন্য নীতিমালা আছে। এগুলো লাগানোর সময় নীতিমালা মানতে হবে। আমরা এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি, মিডিয়ায় প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানিয়েছি, প্রত্যেকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এমনকি মাইকিংও করা হয়েছে। অনেকেই গত দুই দিনে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনুমোদন নিয়েছেন। একটি শহরের ভেতরে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চলতে পারে না। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি ফুটপাত ও সড়কে রাখা অবৈধ মালামাল উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে।’

আজ গুলশানে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ১৫০টি অবৈধ সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।

বনানী ১১ নম্বর সড়কে অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় প্রায় শতাধিক সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া, সড়ক ও ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোট ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এ ছাড়া, প্রগতি সরণিতে অঞ্চল ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের পরিচালনায় উচ্ছেদ অভিযানে মোট ৫২টি সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়। এসময় ফুটপাত ও সড়কে অবৈধভাবে মালামাল রাখায় সেগুলো ৬৬ হাজার ৭০০ টাকা নিলামে বিক্রয় করা হয় এবং ৯টি মামলায় ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গত তিন দিনে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা ডিএনসিসিকে জমা দিয়ে সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড অনুমোদন নিয়েছে।

অভিযান চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago