সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি বিএসএফ মহাপরিচালকের
ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বলেছেন, ইন্দো-বাংলা সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যে নামানোর কৌশল নিয়ে কাজ করছেন তারা।
ঢাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে চার দিনের মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলন শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই বলতে পারি যে আমাদের নীতি সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা।’
বিএসএফের মহাপরিচালক দাবি করেছেন যে তার সৈন্যদের সর্বশেষ উপায় হিসেবে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বারবারই সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ইন্দো-বাংলা সীমান্তে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৩ জন। এ বছরের প্রথম সাত মাসে সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন ২৯ জন।
নিহত প্রায় সবাই ছিলেন নিরস্ত্র এবং তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বিভিন্ন অপারেশনে দুই দেশের অপরাধী কর্তৃক ৫২ জন সৈন্য আহত হয়েছেন জানিয়ে বিএসএফের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘৭০ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে রাত ১০টা থেকে ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে। সাধারণত এই সময়ে অপরাধীরা তাদের কার্য সম্পাদন করে থাকে। দ্বিতীয়ত, অভিযানগুলো ভারতের মাটিতেই হয়েছে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমি কোনো হত্যাকাণ্ডকেই ন্যায্যতা দিচ্ছি না। আমি পুনরায় বলছি, আমরা এটাকে (সীমান্ত হত্যা) শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি এবং আগামীতে আপনারা এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে পাবেন।’
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এবং বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল ৫০ তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের আলোচনায় যোগ দেন।
যৌথ রেকর্ড অব ডিসকাশনস (জেআরডি) স্বাক্ষর করে আজ শনিবার সম্মেলনের সমাপ্তি হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘বিএসএফের মহাপরিচালক আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন যাতে আমরা মানুষের প্রাণহানি এড়াতে পারি।’
বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে ভারতের ভূখণ্ডে যাওয়া বিজিবির ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাদেশের সীমানা চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে অনেক নদী, জলাভূমি, পাহাড় এবং সমভূমি রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতি পাঁচ কিলোমিটারে আমাদের সীমান্ত ফাঁড়ি রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় সীমান্ত রক্ষার চেষ্টা করছি।’
করোনার কারণে বন্ধ থাকা সীমান্তে যৌথ টহল পুনরায় শুরু করতে সম্মত হয়েছে উভয় বাহিনী।
বিজিবির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় বাহিনীই মানব পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, গবাদিপশু পাচার রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য রিয়েল টাইম তথ্য ভাগাভাগি করতে সম্মত হয়েছে।
Comments