বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি
গত ১২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত ও উজানের পানি না আসায় বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি। তবে, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমেনি এখনো।
এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে দুর্গত এলাকার রাস্তা-ঘাট ও ফসলের জমি। উজানের পানির সঙ্গে আসা বালিতে ঢেকে গেছে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোর ফসলের খেত।
অনেক জায়গায় গ্রামীণ রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসিরা। কলাগাছের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। কোথাও কোথাও টাকার বিনিময়ে নৌকায় চলাচল করার দৃশ্যও চোখে পড়েছে।
অনেকের ঘরে খাবার থাকলেও রান্না করতে পারছেন না, আবার অনেকের ঘরে খাবার নেই। ফলে, নদীপাড়ের মানুষের দিন কাটছে উপোষ করেই।
তিস্তা ও ধরলাপাড়ের অনেক স্থানে আবার দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগানসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা স্থাপনা। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে সরকারি রাস্তা ও অন্যের জমিতে। দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে বাস্তুহারা পরিবারের সংখ্যা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের বন্যাদুর্গত দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নদীর পানি কমেছে কিন্তু, আমাদের এলাকা থেকে এখনো পানি নামছে না। আমাদের বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি থাকায় সীমাহীন কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল এলাকার বন্যাদুর্গত ক্ষিতিশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘এবারের বন্যায় উজানের পানির সঙ্গে বিপুল পরিমাণে বালি এসে ফসলি খেত ঢেকে ফেলেছে। খেত থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও বালু থেকে যাচ্ছে। আবাদি জমিতে বালু জমাট বেঁধে থাকায় ফসল আবাদ করতে পারবো না।’
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের বানভাসি আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের রাস্তা বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ায় চলাচল করতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কলাগাছের তৈরি ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। শিশু ও বয়স্করাও এভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। দুর্গত এলাকা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত কিংবা উজানের পানি না এলে আপাতত নতুন করে বন্যার আশঙ্কা নেই।’
Comments