কুষ্টিয়ায় এক শিল্পপতি ও ৪ জেলা পরিষদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলা

কুষ্টিয়ায় মার্কেট ভেঙে জমি দখলের অভিযোগে এক শিল্পপতিসহ জেলা পরিষদের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কুষ্টিয়ায় মার্কেট ভেঙে জমি দখলের অভিযোগে এক শিল্পপতিসহ জেলা পরিষদের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সদর উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী-সন্তানসহ চার জন বাদী হয়ে গতকাল রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের আগামী ২৪ নভেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবাদীরা হলেন— কেএনবি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি ফিস ফিড উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, সার্ভেয়ার মো. মনিরুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিনুজ্জামান শাহীন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত বছরের ১০ জুন সদর উপজেলার বটতৈল এলাকায় কুষ্টিয়া-খুলনা হাইওয়ের ওপর রাকিবুল ইসলামের ২২টি দোকান বিশিষ্ট দোতলা ভবন গুঁড়িয়ে দিয়ে জবরদখল করা হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর জায়গাটি দখলে নেন কেএনবি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক কামরুজ্জামান।

কামরুজ্জামানের দাবি, তিনি জমিটি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ থেকে ইজারা নিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নিজের উপার্জিত সকল সম্বল দিয়ে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার বটতৈল মৌজায় ১৯৯৫ সালে প্রায় ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন রাকিবুল ইসলাম। ওই সম্পত্তির ওপর নির্মাণ করেন পাকা মার্কেট। তাতে দোকান রয়েছে ২২টি।

প্রামাণিক সুপার মার্কেটের এসব দোকানে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু, কিছুদিন ধরেই নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থিত কেএনবি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির মালিক কামরুজ্জামানের ওই মার্কেটের ওপর নজর পড়ে। নানাভাবে মার্কেটের মালিককে তার কাছে বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু, তাতে সাড়া না দেওয়ায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন তিনি।

ব্যক্তিমালিকানাধীন হলেও জমির মালিকানা দাবি করতে থাকে জেলা পরিষদ। এরই মধ্যে জেলা পরিষদ ওই জমির মালিকানা দাবি করে কুষ্টিয়ার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে মামলা দায়ের করে।

কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহাতাব উদ্দিন জানান, মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কোনো অথরিটি আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মার্কেটটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। কামরুজ্জামান নাসিরের নামে জেলা পরিষদের দেওয়া ওই লিজে দাগ নম্বর থাকলেও কোনো খতিয়ান নম্বর নেই। খতিয়ান নম্বর না দেওয়ার কারণ ওই খতিয়ান নম্বরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন।

তিনি বলেন, ‘যেখানে জেলা পরিষদ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছে, সেখানে মামলায় রায় আসার আগে সেই যদি তারা নিজের বলে দাবি করতে পারে না এবং কাউকে লিজও দিতে পারে না। লিজ দিলেও সেটি সম্পূর্ণ বেআইনি হবে। যারা উচ্ছেদের সঙ্গে জড়িত, তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক মামলা করতে পারবেন। মার্কেট ভ্যালু অনুযায়ী তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন।’

মামলার এক পর্যায়ে রাকিবুলের মৃত্যু হলে তার মা রোকেয়া খাতুন, স্ত্রী হোসনেয়ারা খাতুন, ছেলে হুসাইনুল ও হুজ্জাতুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মামলা করেন।

এ বিষয়ে বিবাদী কামরুজ্জামান বলেন, ‘জমিটি আমাকে জেলা পরিষদ লিজ দিয়েছে। মামলা হয়ে থাকলে তা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করবো।’

Comments

The Daily Star  | English

Labour Issues: Govt, businesses play down prospects of US trade penalties

The government and business leaders have played down the significance of the diplomatic note from the Bangladesh embassy in Washington DC to the commerce ministry about possible measures like trade penalties and visa restrictions over labour issues.

14h ago