‘শুদ্ধি অভিযানে’ সিএমপির কমিশনার, সরানো হচ্ছে বিতর্কিতদের

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) যেসব বিতর্কিত কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে একই থানায়, ফাঁড়ি বা দপ্তরে কর্মরত আছেন তাদের তালিকা করছেন সিএমপি নতুন কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। ইতিমধ্যে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে সৎ ও দক্ষ অফিসার পদায়ন শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) যেসব বিতর্কিত কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে একই থানায়, ফাঁড়ি বা দপ্তরে কর্মরত আছেন তাদের তালিকা করছেন সিএমপি নতুন কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। ইতিমধ্যে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে সৎ ও দক্ষ অফিসার পদায়ন শুরু হয়েছে।

ফলে দীর্ঘদিন ধরে এক থানায়, ফাঁড়ি বা ইউনিটে কর্মরত বিতর্কিত অফিসারদের মধ্যে এখন চলছে ‘পোস্টিং আতংক’। সিএমপির প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, বিতর্কিতদের এই তালিকায় বিভিন্ন র‍্যাংকের ৩০ জন পুলিশ সদস্যের নাম রয়েছে।

সূত্র বলছে, কক্সবাজারে মেজর সিনহা মো. রাশেদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর জনসাধারণের মনে পুলিশের যে ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের কড়া বার্তা দিতেই এই ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু হয়েছে। এর আরেক উদ্দেশ্য হলো দক্ষ ও যোগ্য অফিসারদের পদায়ন করে কাজে গতিশীলতা আনা।

গত ৭ সেপ্টেম্বর সিএমপির ৩০তম পুলিশ কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নেন সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। পুলিশ সূত্র জানিয়েছেন দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সম্পর্কে বার্তা দিয়েছেন ।

বিতর্কিত ও অযোগ্যদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে তালিকা বানানোর কাজ শুরু করেন। তালিকা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিটে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্তূপ আছে তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তাদের বিষয়েও।

সিএমপি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন কমিশনার তার কার্যালয়ে বিভিন্ন অফিসারদের ডেকে বিভিন্ন ইস্যুতে মুখোমুখি কথা বলছেন এবং ডায়রিতে বিভিন্ন বিষয়ে নোট নিচ্ছেন ।

সিএমপি সূত্রে আরও জানা যায়, দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরই সিএমপির রিজার্ভ অফিসের আরআই উপ-পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলামকে বদলি করেন কমিশনার। এস আই শফিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় রয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এসআই বদিউল।

সোমবার আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানকে সরিয়ে ডবলমুরিং থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেনকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। মোস্তাফিজুর রহমানকে নগর পুলিশের ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের পরিদর্শক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

চান্দগাও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামানকে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে। অন্যদিকে কাউন্টার টেররিজমের বোমা নিস্ক্রিয়করণ ইউনিটের প্রধান পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়াকে করা হয়েছে চান্দগাও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত)।

জহির এবং রাজেস সিএমপিতে দক্ষ অফিসার হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে তাদের রয়েছে সাফল্য।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন থানায় অর্থের বিনিময়ে ওসি পদায়নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কমিশনার বলেছিলেন, 'আমার কাজ দেখুন, তারপর মতামত দেবেন, কাজ দেখে তারপর আমাকে মূল্যায়ন করুন।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, 'টাকার বিনিময়ে ওসি পদায়নের ধারণা এখন শেষ। দক্ষ ও যোগ্যদের মূল্যায়ন করে পুলিশিং এ গতিশীলতা আনা হচ্ছে।'

শুদ্ধি অভিযান সম্পর্কে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুদ্ধি অভিযান কথাটি আসলে ঠিক নয়, আমি যোগ্য লোকদের যোগ্য জায়গায় পদায়ন করছি। এর বেশি কিছু নয়।'

'তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কাজের। ভালো কাজ করলে যেমন পুরস্কৃত হবে তেমনি খারাপ কাজ করলে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে, এটি (বদলি) একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার অংশ; অন্য কিছু নয়,' বলেন সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago