শীর্ষ খবর

ওসি প্রদীপের ৭ ‘ইন্ধনদাতা’র বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজার জেলার টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধ কর্মের ‘ইন্ধনদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত করে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
oc_pradeep
প্রদীপ কুমার দাশ। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার জেলার টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধ কর্মের ‘ইন্ধনদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত করে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গতকাল রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন কারামুক্ত সংবাদকর্মী ফরিদুল মোস্তফা খানের ছোট বোন ফাতিমা খানম। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অপহরণ, ডাকাতি, জোরপূর্বক স্ট্যাম্প আদায়সহ বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মাসুম খান মামলাটি রেকর্ড করেন।

মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- টেকনাফের ফুলের ডেইলের  মৃত তজর মুল্লুকের ছেলে আবুল কালাম প্রকাশ আলম, হ্নীলা নয়া বাজার পশ্চিম সাতঘরিয়া পাড়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মফিজ আহমদ ইকবাল (প্রকাশ গুটি মফিজ), ফুলের ডেইলের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে জহিরুল ইসলাম, একই এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে দলিলুর রহমান, পানখালীর মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে সরওয়ার কামাল, ফুলের ডেইলের শরাফত আহমদের ছেলে নুরুল আবছার, মৃত আবুল বশরের ছেলে রফিকুল ইসলাম।

বাদী ফাতেমা খানম এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মাদকের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি প্রদীপদের সঙ্গে আঁতাত করে গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে তার বড় ভাই সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে অস্ত্রের মুখে তুলে এনে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। এরপর সাজানো মামলা দিয়ে সাংবাদিক ফরিদুলকে কারাগারে পাঠানোর পর যোগসাজশে তারা বাদীর কক্সবাজার শহরের কুতুবদিয়া পাড়ার বসতবাড়িতে ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আকস্মিকভাবে বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা বাদীর অপর এক বোনকে লোহার রড দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করে ক্ষান্ত হননি, মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে মাটিতে ফেলে রাখে। আসামিরা ঘটনার রাতে বাদী এবং তার ছোট বোনের পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ৭৫ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল সেট ও বাড়ির জরুরি কাগজপত্র লুট করে। এরপর আসামিরা বাদীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তিনশ টাকার একটি ননজুডিশিয়াল খালি স্ট্যাম্পের শিরোভাগে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে ঘটনার বিষয়ে কাউকে বললে পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে হুমকি দেয়। এরপর তারা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে লুণ্ঠিত মালামালসহ পালিয়ে যায়। আসামিরা টেকনাফ থানার সাবেক ওসির দালাল, মাদক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাদী ও তার পরিবারকে নজরদারিতে রাখার পাশাপাশি বড় ভাই সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা কারাগারে থাকায় এবং প্রশাসনিকভাবে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়।’

কক্সবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মাসুম খান বলেন, ‘সংঘঠিত ঘটনার বিষয়ে বিলম্ব হলেও মামলা রেকর্ড হওয়ায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

কক্সবাজারের সাংবাদিকদের মতে, আসামিদের গ্রেপ্তার করলেই সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা ও তার পরিবারের উপর কেন বর্বর নির্যাতন এবং এতগুলো মিথ্যা মামলা হয়েছে তার আসল রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি প্রদীপের অনেক কুকর্মের তথ্য বেরিয়ে আসবে।

কারামুক্ত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা এ ব্যাপারে বলেন, ‘এ মামলার আসামিরাসহ প্রদীপ বাহিনী আমাকে তুলে নিয়ে পৈশাচিক ও বর্বর নির্যাতন চালিয়ে ৬টি মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১১ মাস পাঁচ দিন আমি কারাগারে ছিলাম। এ সময়ে মাদক ব্যবসায়ীরা আমার পরিবারের উপর কী করেছে তা আমি দেখিনি। যারা তাদের হাতে প্রতিনিয়ত হয়রানি আর জুলুমের শিকার হয়েছে। তাই তারা প্রতিকারের আশায় আইনের আশ্রয় নিতেই পারে। আমি প্রদীপ গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আশাকরি শিগগির ন্যায় বিচার পাব। কারণ, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’

Comments

The Daily Star  | English
Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory

Column by Mahfuz Anam: Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory?

With values destroyed, laws abused, institutions politicised, and corruption having become the norm, will victory be worthwhile for the Awami League?

10h ago