গ্রামাঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা
গ্রামাঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে ২০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ রুরাল ওয়াটার, স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন ফর হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পটি গ্রামাঞ্চলের প্রায় ছয় লাখ মানুষকে বড় ও ছোট নলের মাধ্যমে নিরাপদ ও পরিষ্কার পানি পেতে সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেকের ঘরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং মানুষকে হাত ধোয়ার যথাযথ পদ্ধতিতে উদ্বুদ্ধ করা হবে। যাতে করে কোভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে তারা সুরক্ষা পায় এবং নিরাপদ থাকতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ এবং ভূটানের কান্ট্রি ডিরেকটর মের্সি টেম্বন বলেন, ‘সকলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করে এবং খোলা জায়গায় মলত্যাগের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তবে পানি ও স্যানিটেশনের মান এবং নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও জনশক্তি উন্নয়নের মধ্যকার যোগসূত্রটি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পটি পরিষ্কার পানি এবং স্যানিটেশন সেবা দেবে, যা ডায়রিয়াজনিত রোগ কমাবে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে স্টান্টিং কমাবে এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের মান উন্নত করবে। বিশেষত অপেক্ষাকৃত দুর্বলরা এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন। এটি দেশের দারিদ্র্য হ্রাস করতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।’
২০১৭ সালে গ্রামাঞ্চলে মাত্র তিন শতাংশ পরিবারে পাইপযুক্ত পানির সংযোগ ছিল। এই বড় ও ছোট পাইপযুক্ত স্কিমগুলোতে বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রকল্পটি পরিবারের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করতে ঋণ দেবে। এতে করে স্থানীয় উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে। এছাড়াও, পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের প্রকল্পের গুণমান এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং স্যানিটেশন বর্জ্য বস্থাপনার বিষয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
প্রকল্প প্রধান ও বিশ্বব্যাংকের জৈষ্ঠ্যে পানি বিশেষজ্ঞ রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনার তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির গুণমান এবং সহজলভ্যতা কমে তা ওয়াশ সেক্টরকে প্রভাবিত করছে। এই প্রকল্পটি প্রকৃতি থেকে বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশন সুবিধা তৈরি করবে। সেই সঙ্গে ভুপৃষ্ঠের জলাবদ্ধতা এবং ভূগর্ভস্থ পানির দূষণ কমাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করবে।’
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় দেড়শ নারী উদ্যোক্তাকে ঘরে ঘরে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রয় করার জন্য ক্ষুদ্র ঋণ দেবে। ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের ৭৮টি উপজেলায় এই প্রকল্প চলবে।
Comments