অকপট নতুন বাঁধন

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

লাক্স তারকা আজমেরী হক বাঁধন করোনা মহামারির কয়েক মাসে জীবনটাকে নতুন ছকে বেঁধে নিয়েছেন। নিজেকে আবিষ্কার করেছেন নিজের ভেতর থেকে। তবে, চেনা ছক ভাঙতে অনেক বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে। জীবনকে নতুন ভাবে চেনা ও জানার উপলব্ধির কথা অকপটে বলেছেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে।

করোনা মহামারির সময়ে কতোটা দেখা হলো নিজের জীবনের চারপাশকে?

করোনা মহামারির একেবারে শুরু থেকেই ঘরবন্দি ছিলাম। এটা আমদের জন্য অনেক বড় একটি নতুন ঘটনা। কতোকিছু যে এলোমেলো করে দিয়ে গেলো। ছকেবাঁধা জীবনের বাইরে অনেক যে জীবন আছে তা বুঝিয়ে দিয়ে গেলো এই কয়েকমাসে। এটা বেশ ভালোভাবেই উপলদ্ধি করেছি। নিজের ভেতরের অনেক কিছু পরিবর্তন করেছি। অন্যসময় হলে তা সম্ভব হতো না। এখনকার সময় নিয়েই আমার ভাবনা শুধু। আগামীর কিছুই মাথার ভেতর নেই।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

কোনো শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন এ সময়ে, অনেকেই তো ঘরে থেকে শুটিং করেছেন?

ঘরে বসেই সামাজিক সচেতনতামূলক কিছু কাজে অংশ নিয়েছি। নিজের মুঠোফোনে তা শুট করেছি। ডাব’ এর একটি সচেতনতামূলক প্রজেক্টে ‘ডাব সেলফ-ইস্টিম উইথ আজমেরী হক’ পর্বটি ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। এমন আরও কিছু সামাজিক সচেতনতার কাজ করেছি।

এর মধ্যে কি সিনেমা, নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র কিংবা টেলিফিল্মের শুটিং করেছেন?

না, নতুনভাবে কোন শুটিংয়ে অংশ নেইনি। করোনার আগে একটা সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলাম। তার জন্য দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ছিল। আমার অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় সিনেমা। চরিত্রটার ভেতর-বাহির দেখার চেষ্টা করেছি। এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। চরিত্রে সঙ্গে থাকতে চেয়েছি। অনেকদিন বের হতে পারিনি চরিত্রে মধ্য থেকে। এর মধ্যে দু’ একটি কাজের কথা চলছে। কিছু কাজ করতে ইচ্ছা করিনি। কারণ, মন থেকে সাড়া পাইনি। এখন শুধু কাজ করার জন্য কাজ করতে ইচ্ছা করে না।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

এই পরিবর্তন কী বাসায় থাকতে থাকতে হলো নাকি করোনা মহামারির সময়ে?

আমার কেন জানি মনে হয়েছে নিজের ভালো লাগার জন্যও কিছু কাজ করা উচিৎ। এক সময় মনে হতো বেশি বেশি কাজ করি, না হলে পিছিয়ে পড়ব। এমন অনেক কাজের অংশ হয়েছি। এখন মনে হয় এমন কিছু করব মানুষ যেন তা নিয়ে ভাবে। হুমড়ি খেয়ে কোনকিছুর পেছনে দৌড়াতে ভালো লাগে না। নতুনভাবে জীবনটাকে চেনা হয়েছে। আসছে নভেম্বরে ৩৭ বছরে পা দিবো। একজন মা আমি। আসলে কী, জীবনটকে আবিষ্কার করতে জানতে হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার বদলে যাওয়ার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল-

আমাকে এই বিষয়ে অনেকেই বলছেন, এমনভাবে বললে জনপ্রিয়তা চলে যাবে। অনেকেই এমন কথা শুনতে পছন্দ করে না। কিন্তু, আমার চিন্তা, ভাবনা, ভালো বা মন্দ লাগা বিষয়গুলো বলেছি। আগে নিজের জন্য অনেক চিন্তা করতাম, জনপ্রিয়তার কথা মাথায় থাকত। আসলে নিজের চিন্তাগুলো প্রকাশ করা প্রয়োজন। যা অনুভব করছি ও ভাবছি। এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলব্ধি।

আর কী কী করেছেন করোনা মহামারিতে?

আগে আমার তেমন পড়ার অভ্যাস বেশি ছিল না। এই করোনা মহামারিতে পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। আমি এর মধ্যে  হুমায়ুন আজাদের ‘নারী’, ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ শেষ করেছি। তসলিমা নাসরিনের অনেকগুলো লেখা পড়েছি। এ ছাড়া, করোনার শুরু থেকে ‘করোনার দিনগুলো’ নাম দিয়ে ডায়রি লিখছি। সেখানে আমার নিত্যদিনের ঘটনার সঙ্গে বিশেষ কোনো বিষয় নিয়েও লিখি। আমি বেশিরভাগ লেখা রাতে লিখি, কখনো কখনো সকালের দিকেও লেখা হয়। আমার মেয়ে সায়রা অনলাইনে ক্লাস করে সেদিক মনোযোগ দিতে হয়। এভাবেই কাটছে নতুন স্বাভাবিক জীবন।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

4h ago