নাটকীয় ম্যাচে রেকর্ড রান তাড়া দেখল আইপিএল
শারজাহর ছোট মাঠে মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সেঞ্চুরি, লোকেশ রাহুলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৩ রানের চূড়ায় উঠেছিল কিংস ইলিভেন পাঞ্জাব। তাতেও রক্ষা হয়নি তাদের। রান তাড়ায় স্টিভেন স্মিথের আগ্রাসী শুরু পর সঞ্জু স্যামসনের ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। চারে নেমে ব্যাটে বল লাগাতে হিমশিম খাওয়া রাহুল তেওয়াতিয়া মনে হচ্ছিল ম্যাচটা ডুবিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে এক ওভারে ৫ ছক্কা মেরে তিনিই ঘুরিয়ে দেন খেলা। বারবার রঙ বদলানোর পর দুর্দান্ত জয় পেয়ে যায় রাজস্থান রয়্যালস।
৩ বল বাকি থাকতে কিংস ইলিভেন পাঞ্জাবকে ৪ উইকেটে হারায় রাজস্থান। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডও এটাই। এর আগে প্রথম আসরে তখনকার ডেকান চার্জার্সের ২১৪ রান তাড়া করে জিতেছিল রাজস্থান রয়্যালসই। দলকে জেতাতে ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেছেন সঞ্জু, শুরুতে ভুগলেও ৩১ বলে ৫৩ করেন তেওয়াটিয়া, স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৫০ রানের ইনিংস।
রোববার রাতে শারজাহ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দুই দলের বোলাররাই ছিলেন অসহায়। কে কতো কম মার খেতে পারেন সেই চেষ্টাই করতে হয়েছে তাদের।
পাটা উইকেট, রাতের শিশির আর ছোট বাউন্ডারি মিলিয়ে ২২৪ রান করে জেতাটা অসম্ভব ছিল না। রান তাড়ায় নেমে দ্রুতই তা বুঝিয়ে দেন স্মিথ। প্রথম ওভার থেকেই ছুটে তার ব্যাট। আরেক প্রান্তে জস বাটলার তড়িঘড়ি ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন আইপিএলে বরাবরই রোমাঞ্চকর ব্যাটিং করা সঞ্জু।
এসেই মেতে উঠেন ছক্কায়। দুজনের ব্যাটে টগবগিয়ে ছুটতে থাকে রাজস্থানের রানের চাকা। মাত্র ৪০ বলেই তাদের জুটিতে আসে ৮১ রান।
স্মিথ আউট হয়ে ফেরত গেলে রবিন উত্থাপা, রিয়াম পরাগ, টম ক্যারানদের রেখে নাটকীয়ভাবে ক্রিজে পাঠানো হয় লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার তেওয়াটিয়াকে। মূলত বোলিংয়ের জন্য দলে আসা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নেমে খেলাই যেন স্থবির করেন দিয়েছিলেন।
ডট বলে চাপ বাড়াচ্ছিলেন সঞ্জুর উপর। প্রথম ১৯ বলে মাত্র ৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আরেক দিকে তুফান তুলে দলকে খেলায় রাখার চেষ্টায় ছিলেন সঞ্জু। দারুণ সব ছয় মেরেছেন তিনি। সাতবার বল বাউন্ডারির ওপারে উড়িয়ে পাঠিয়েছেন। তার আরও একটি নিশ্চিত ছয় অবিশ্বাস্য ফিল্ডিংয়ে বাঁচান নিকোলাস পুরান।
মোহাম্মদ শামির বলে সঞ্জুর বিদায়ে তাই মনে হচ্ছিল ম্যাচটা হাতছাড়াই হয়ে গেল রাজস্থানের।
এরপরই বদলে যায় পাশার দান। ব্যাটে বল লাগাতে না পারা তেওয়াটিয়ার অন্য মূর্তির দেখা মিলে। শেলডন কটরেলকে এক ওভারেই ৫ ছক্কা মেরে দেন তিনি। খেলা নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। আরও দুই উইকেট হারালেও জিততে তাই আর সমস্যা হয়নি স্মিথদের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা পাঞ্জাব ওপেনাররা দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। চার-ছয়ে মাতোয়ারা করে ১৮৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ৫০ বলে ১০৬ রান অরে আউট হন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। লোকেশ রাহুলের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ বলে ৬৯ রান। পুরান নেমে করেন ৮ বলে ২৫। তবে হাতে উইকেট থাকায় শেষ চার ওভারে প্রত্যাশার তুলনায় রান বেশ কিছুটা কম করেছে পাঞ্জাব। যার খেসারতও দিতে হয়েছে তাদের।
Comments