বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ, পাবনায় কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছে ১২২ মিল
পাবনায় এ বছর বোরো মৌসুমের ধান চাল সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। চুক্তিবদ্ধ মিলগুলো আশানুরূপ সরবরাহ না করায় এবং বেশ কিছু মিল মালিক চুক্তি করার পরও চাল সরবরাহ না করায় ধান চাল অভিযান ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, জেলার ১২২টি চাল মিল চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা চুক্তি করার পরও চাল সরবরাহ করেনি। চিহ্নিত এসব মিলগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
পাবনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর বোরো মৌসুমে পাবনা জেলার ৯ উপজেলায় ২৪৫৭১ মেট্রিক টন চাল এবং ৬৬৯৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। চলে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। তবে আশানুরূপ সংগ্রহ না হওয়ায় ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চালানো হয়। জেলার নয়টি উপজেলায় ৬৮২টি মিলারের সাথে চুক্তি করে সরকার।
ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, অতিরিক্ত সময়সহ নির্ধারিত সময় শেষে, জেলায় ১৪৩৯৬ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয় এবং ৬২১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চিহ্নিত মিলগুলোকে সরকারের প্রণোদনার অর্থ বরাদ্দ না করা এবং আসন্ন আমন সংগ্রহ অভিযানে নতুন করে আর কোন চুক্তি না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও চুক্তির বরখেলাপ করায় এসব মিলগুলো সরকারি সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
তবে চাল কল মালিকদের দাবি সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার জন্য খাদ্য বিভাগেরও দায় আছে।
জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান মালিথা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সারাদেশে মে মাসের শুরু থেকে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও পাবনার সবচেয়ে বড় চালের মোকাম ঈশ্বরদী উপজেলায় চাল সংগ্রহ শুরু হয় জুন মাসে। একবার চাল মিলের তালিকা করার পর খাদ্য বিভাগ অভিযান শুরুর পর আবারও নতুন করে তালিকা করে। তালিকার জটিলতায় এক মাস পিছিয়ে যায় খাদ্য শস্য সংগ্রহ কাজ আর এ সময়ের মধ্যে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় মিলাররা আর আগের দামে চাল সরবরাহ করতে পারেনি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ৩৬ টাকা দরে চাল দিতে না পারায় লোকসানের আশঙ্কায় অনেক মিল মালিকই চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করতে পারেনি।
মিলাররা ক্রয়মূল্য বাড়ানোর জন্য বার বার খাদ্য বিভাগের কাছে দাবি করলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাবনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার বলেন, প্রথমে যেসব মিলের তালিকা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে প্রায় ৪৫টি মিল চুক্তির শর্ত পূরন না করায় তদন্তে তাদের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। পরে নতুন করে তালিকা প্রস্তুত করা হয় তবে অভিযান বন্ধ করা হয়নি।
ক্রয় মূল্য বাড়ানোর ব্যাপারে খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, এটি সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হয়, ফলে দাম বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই।
Comments