মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত ঐতিহাসিক সোনাহাট সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরেও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ৩৬৬ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটি ২০০১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।
ভুরুঙ্গামারীর দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত ঐতিহাসিক সোনাহাট সেতু। ছবি: এস দিলীপ রায়

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত ঐতিহাসিক সোনাহাট সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরেও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ৩৬৬ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটি ২০০১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হয়। ২০১২ সালে সোনাহাট স্থলবন্দর চালু হলে এই সেতুর ওপর চাপ বাড়তে থাকে। বর্তমানেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ এ সেতু দিয়ে আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে দুধকুমার নদের উপর একশ ছত্রিশ কোটি তেত্রিশ লাখ বাহাত্তর হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণের কথা। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কাজ শুরুর কথা থাকলেও তা এখনো শুরু হয়নি। কবে নাগাদ নতুন সেতুর কাজ শুরু হবে তা জানেন না স্থানীয়রা।

ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ৩৬৬ মিটার দীর্ঘ লোহার সেতুটি ২০০১ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। ছবি: এস দিলীপ রায়

বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সোনাহাট স্থলবন্দর চালুর পর থেকে দুধকুমার নদের উপর সোনাহাট সেতুর ব্যবহার ও গুরুত্ব বেড়েছে। প্রতিদিন তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। অনুযায়ী দুধকুমার নদের উপর নতুন সড়ক সেতুটি আগামি বছর ২০২১ সালে জানুয়ারি মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেতুটির কাজ শুরু করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ লোহার সেতুটি যে কোনো সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা মফর আলী (৬২) বলেন, ‘এ সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমাদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। নতুন সড়ক সেতুটির কাজ দ্রুত শুরু এবং নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাই।’

সোনাহাট স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী রায়হান কবীর বলেন, ‘লোহার সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমাদের নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। কারণ অনেক ট্রাক চালক পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে যেতে চান না। দুধকুমার নদের উপর নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভালোভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছি না।’

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ইয়াসিন আরাফাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নকশা অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একাধিকবার দুধকুমার নদে পাইলিং করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। সে কারণে নতুন করে মাটির নমুনা পরীক্ষাপূর্বক নকশা তৈরির কাজ চলছে। নতুন নকশার অনুমোদন পেলেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে পারবে। সেটা কবে নাগাদ তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন বলেন, ‘খুব শিগগির নতুন নকশার অনুমোদন পাওয়া যাবে। নতুন নকশার অনুমোদন পেলেই শিগগিরি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।’

Comments