নোবিপ্রবি শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষকরা। গতকাল থেকে তাদের এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শুক্রবার বিকালে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর ও সাধারণ সম্পাদক মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষক অস্থায়ী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষকের পরবর্তী পদে পদোন্নতির সময়ও প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাদের পরে স্থায়ী পদে নিযুক্ত শিক্ষকরাও পদোন্নতি পেয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে একধরনের বৈষম্য দেখা যাচ্ছে।
এ ছাড়াও, অনেকগুলো বিভাগেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে দুইটি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকায় বিভাগ পরিচালনায় পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই বলে অনেক বিভাগের শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষা ছুটিতেও যেতে পারছেন না। এতে করে শিক্ষকদের মাঝে উচ্চশিক্ষা জনিত একধরনের অনিশ্চয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, শিক্ষক সমিতি সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সময়সীমা বেধে দেয়। সেসময় উপাচার্য শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে বার বার আশ্বাস দিলেও প্রদত্ত সময়ের মাঝে কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষক সমিতি অস্থায়ী শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
শিক্ষক সমিতি আশা করে- শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, সাবেক উপাচার্যের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল নোবিপ্রবি’র সব পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই স্থগিত আদেশের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আদেশ তুলে নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও কর্মকর্তা সংকট চললেও, নতুন করে নিয়োগ দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদারুল আলম শিক্ষকদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তাদের এ দাবি যৌক্তিক। তাদের দাবি পূরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। খুব শিগগির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান শিক্ষক সংকট ও শিক্ষদের দাবি নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষা সচিব।’
Comments