ট্রাম্পের করোনাবচন!

Donald Trump.jpg
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

শুরুতে করোনাভাইরাসকে ‘সাধারণ ফ্লু’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। পরেও তেমন পাত্তা দেননি। যারা মাস্ক পরে, প্রকাশ্যে তাদের নিয়ে হাসাহাসি, সমালোচনা করেছেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের বাইরে গিয়ে মাস্কবিরোধীদের সমাবেশেও অংশ নিয়েছেন।

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ শুক্রবার তিনিসহ ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। ট্রাম্পের সস্ত্রীক করোনা আক্রান্তের খবরে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে হাসাহাসি করছে মানুষ, চলছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। 

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত দুই লাখেরও বেশি লোকের মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও গত জানুয়ারি থেকে প্রায় সময়ই করোনাভাইরাস নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে আসছেন ট্রাম্প। এখানে তার কয়েকটি আলোচিত মন্তব্য তুলে ধরা হলো-

২২ জানুয়ারি: সিএনবিসিকে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। চীন থেকে আসা এক ব্যক্তি ভাইরাসটি এনেছে। এটি ঠিক হয়ে যাবে।’

২৪ জানুয়ারি: তিনি টুইট করেন, ‘চীন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রচেষ্টা ও স্বচ্ছতার প্রশংসা করে। এটি ঠিক কাজ করবে। আমেরিকার জনগণের পক্ষ থেকে আমি প্রেসিডেন্ট শিকে ধন্যবাদ জানাই।’

২৩ ফেব্রুয়ারি: সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একান্তভাবে কাজ করছি। যা হচ্ছে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন আছি। আমাদের দেশে এটি যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে।’

২৭ ফেব্রুয়ারি: হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ‘এটি নাই হয়ে যাচ্ছে। একদিন যাদুর মতো উধাও হয়ে যাবে।’

১০ মার্চ: রিপাবলিকান সিনেটরদের সঙ্গে দেখা করার পর ট্রাম্প বলেন, ‘এটি অপ্রত্যাশিত। বিশ্বব্যাপী আঘাত হেনেছে। আমরা প্রস্তুত এবং আমরা এটি নিয়ে ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এটি চলে যাবে। শান্ত থাকুন, চলে যাবে।’

১৩  মার্চ: সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। না। আমি মোটেও দায়িত্ব নেব না। কারণ, পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটা সময় থেকে নিয়ম, বিধিবিধান জারি করা হয়েছে।’

১৫ মার্চ: হোয়াইট হাউসে ব্রিফিংকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি খুবই সংক্রামক ভাইরাস। অবিশ্বাস্য। তবে, এর ওপর আমাদের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ আছে।’

১৮ মার্চ: ট্রাম্প টুইট করেন, ‘আমি চীনা ভাইরাসকে সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছি। প্রথম থেকেই খুব ভালোভাবে কাজ করেছি। প্রায় সবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমিই চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করেছি।’

৩ এপ্রিল: হোয়াইট হাউসে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরাটা স্বাধীন বিষয়। আপনি পরতেও পারেন, নাও পারেন। আমি পরব না। কেউ এটি পরতে পারে, সেটি ঠিক আছে। আমাকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজা, রাণীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয়। নিজের কথা বলছি, আমি পরব না।’

২৩ এপ্রিল: হোয়াইট হাউসে ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘জীবাণুনাশক এক মিনিটে বিষমুক্ত করছে। ফুসফুসে এভাবে কাজ করে কি না, সেটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’

তবে তিনি জীবাণুনাশক খাওয়ার জন্য মানুষকে উত্সাহিত করছেন না বলে পরে জানিয়েছেন।

২১ মে: ফোর্ড কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন পেছনে ছিলাম, তখন একটি (মাস্ক) পরেছিলাম। গণমাধ্যমের সামনে মাস্ক পরে এসে বিনোদন দিতে চাই না।’

১২ জুলাই: প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে মাস্ক পরার আগে ট্রাম্প বলেন, ‘যখন হাসপাতালে আছেন, বিশেষ করে যখন আপনাকে অনেক লোক কিংবা সেনাদের সামনে কথা বলতে হচ্ছে, তখন আমার মনে হয়ে মাস্ক পরে নেওয়াটা ভালো।’

২১ জুলাই: হোয়াইট হাউসে ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে বলছি, যখন সামাজিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখা যায় না, তখন মাস্ক পরুন। মাস্ক পরা আপনার ভালো লাগুক বা না লাগুক, এর গুরুত্ব আছে। আমি আনন্দের সঙ্গে মাস্ক ব্যবহার করব। এটি কাজে আসবে।’

২৯ সেপ্টেম্বর: প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘যখন প্রয়োজন, আমি মাস্ক পরি।’

ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে সবসময় মাস্ক পরেন বলে উপহাস করে তিনি বলেন, ‘আমি তার মতো করে পরি না। আপনি যখনই তাকে দেখবেন, তিনি মাস্ক পরে থাকবেন। ২০০ ফুট দূর থেকে কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলেও আমার দেখা সবচেয়ে বড় মাস্কটি মুখে রেখে তিনি কথা বলেন।’

আরও পড়ুন:

ট্রাম্প ও মেলানিয়ার করোনা পজিটিভ

ট্রাম্প ও মেলানিয়া কোয়ারেন্টিনে

অবশেষে ট্রাম্পের মুখে মাস্ক

মহামারি নিয়ে ট্রাম্পের যত কাণ্ড

‘চীনের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনা’, আত্মবিশ্বাসী ট্রাম্প

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

3h ago