যমুনার পানি আবারও বিপৎসীমার ওপরে, দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসিদের

ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। গত দুই দিনে যমুনার পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

তবে, নতুন করে পানি বৃদ্ধি পেলেও নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কে এম রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উজানের ঢলে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। গত কয়েকদিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জে প্রায় সবকয়টি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।’

‘আজ শুক্রবার যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে

১৫ মিটার ৪৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে এবং সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ১৩ মিটার ৪৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢল আর বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এ বছর বন্যার ভয়াবহতার কারণে পানি কমা বা বৃদ্ধির ব্যাপারে আগাম ধারণা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে,’ বলেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বন্যার শুরুতে ২৮ জুন সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি প্রথমবার বিপৎসীমা অতিক্রম করে। পরে ৪ জুলাই থেকে পানি কমেতে শুরু করে এবং ৬ জুলাই বিপৎসীমার নিচে চলে আসে। দ্বিতীয় দফায় ৯ জুলাই থেকে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়, ১৩ জুলাই বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এ দফায় প্রায় এক মাস পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। ৭ আগস্ট পানি কমে বিপৎসীমার নিচে আসলেও আরও দুই দফায় পানি বৃদ্ধি পায়। এ পর্যায়ে ১৮ সেপ্টেম্বর আবারও যমুনা নদী বিপৎসীমা অতিক্রম করে কয়েকদিন পরে আবার তা বিপৎসীমার নিচে চলে আসে। নতুন করে গত বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করে।

এদিকে, নদীতে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পুনর্বাসনের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

বন্যা কবলিত এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, বন্যা থেকে এবার তারা যেন রেহাই পাচ্ছেন না। টানা ৫ মাস পানিবদ্ধ থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের। পানি নেমে যাওয়ায় কিছুদিন আগে যারা ঘরে ফিরেছিলেন নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আবারও ঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা গ্রামের নয়ন সরদার দ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বন্যায় শুভগাছা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা রোপা আমন ধান আবাদে যে বীজতলা বানিয়েছিল তা নতুন করে পানি ওঠায় আবার ভেসে গেছে।’

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদীর পানি আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তবে, নতুন করে আর কোনো এলাকা বন্যা কবলিত হয়নি। দ্বিতীয় দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ৬ উপজেলার ৪৪ ইউনিয়নের ২১৫টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়। নতুন করে পানি বৃদ্ধির ফলে এখনো পর্যন্ত জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল পানিবদ্ধ হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago