ভারতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে দলিত তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় ৫ পুলিশ বরখাস্ত
ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে দলিত তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ সুপারসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, এ ঘটনার তদন্তকারী বিশেষ দল এসআইটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনায় যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এই ঘটনায় আটক, নিহতের পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মিথ্যা শনাক্তকারী পরীক্ষা (লাই ডিটেক্টর টেস্ট) করারও আহ্বান জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে ধর্ষিত হন ১৯ বছরের দলিত এক তরুণী। তাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হয়েছিল। তার দেহের একাধিক হাড় ভাঙা ছিল, জিহ্বাও কেটে ফেলা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের বুলগাড়ি গ্রামে ওই তরুণীর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের অনুমতি ছাড়াই পুলিশ তার মরদেহ সৎকার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভ এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও, গ্রামে গণমাধ্যম কর্মী ও রাজনীতিবিদদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ ও প্রশাসন।
শুক্রবারও দিল্লিসহ গোটা ভারতের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। দিল্লির বিক্ষোভ সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও দলিত সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ভিম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, এই ইস্যুতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট। রুলে উত্তরপ্রদেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছে।
ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই নারী মারা গেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানালেও, গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার দাবি করেন, তার মৃত্যুর কারণ ঘাড়ে আঘাত পাওয়া।
তিনি বলেন, ‘তার ফরেনসিক নমুনায় কোনো স্পার্ম (শুক্রাণু) পাওয়া যায়নি।’
নিহতের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলোকে এই ইস্যুকে নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশের একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
Comments