বগুড়ায় আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার বিরুদ্ধে তার শাশুড়ির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, স্থায়ী আমানত এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন শাশুড়ি দেলোয়ারা বেগম।
এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য নিজের মেয়ে রানার স্ত্রী আকিলা শরীফা সুলতানা খানমের বিরুদ্ধেও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন দেলোয়ারা (৬৮)। গত বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া সদর থানায় অভিযোগে উল্লেখ, ২০০১৫ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর ২১ তারিখের মধ্যে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তবে পুলিশ এখনও অভিযোগটিকে মামলা হিসাবে গ্রহণ করেনি।
অভিযোগ অনুযায়ী, রানা এবং তার স্ত্রী আকিলা ২০১৫ থেকে শাশুড়ি দেলোয়ারা বেগমের কাটানারপাড়ার বাড়িতে থেকে সেবা-শুশ্রূষা করে তার অনুগ্রহ আদায় করেন। এর মধ্যে দেলোয়ারা তার তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একটি বিপণি বিতানের দায়িত্ব জামাতা রানার হাতে তুলে দেন। এই সুযোগে রানা তার স্ত্রী আকিলা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপকদের সহযোগিতায় বিভিন্নভাবে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এসব কথা ফাঁস করা হলে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বাড়ি ছাড়েন রানা।
এসব ঘটনার আগে দেলোয়ারা বেগম নিজেই তার সব প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করতেন এবং তার পাঁচ মেয়ে আকিলা শরিফা, মাহবুবা শরিফা সুলতানা, নাদিয়া শরিফা সুলতানা, কানিজ ফাতেমা এবং তৌহিদা শরিফা সুলতানা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার শাশুড়িকে জিম্মি করে তার চার মেয়ে ও জামাতারা আমার এবং আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্য তারা এসব করছে।’
দেলোয়ারা বেগমের ছোট জামাতা মোফাজ্জল হোসেন রনজু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পুলিশ এখনো মামলা নেয়নি। তারা প্রাথমিক তদন্ত করছেন। অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পুলিশ আমাদের কাছে চেয়েছে। ব্যাংক বন্ধ থাকায় গত দুই দিন কাগজপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ করে রনজু বলেন, গত পাঁচ বছর রানা এবং তার স্ত্রী আমার শাশুড়িকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে। আমার শাশুড়ির বাকি চার মেয়েও এই সব প্রতিষ্ঠানের মালিক কিন্তু রানা তার অস্ত্র এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেয়নি।
অভিযোগ কেন মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করা হয়নি জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রানার বিরুদ্ধে অনেক টাকার অভিযোগ। তাই আমরা একটা প্রাথমিক তদন্ত করছি। তদন্তে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেলেই মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
তবে এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য দেলোয়ারা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বগুড়া সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, ‘দেলোয়ারা বেগম নিজে থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। আমরা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
Comments