টটেনহ্যামের কাছে ধরাশায়ী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঘুণাক্ষরেও কি এভাবে ধরাশায়ী হওয়ার কথা ভাবতে পেরেছিল?
রবিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ওলে গানার সুলশারের দল। সবশেষ ২০১১ সালে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল রেড ডেভিলসদের। সেবার শহর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির কাছে এই স্টেডিয়ামে একই ব্যবধানে উড়ে গিয়েছিল তারা।
জোসে মরিনহোর দলের পক্ষে জোড়া গোল করেন হ্যারি কেইন ও সন হিউং-মিন। একবার করে লক্ষ্যভেদ করেন সার্জ অরিয়ের ও তঙ্গি এনদমবেলে। ২৮তম মিনিটে অঁতনি মার্শিয়াল সরাসরি লাল কার্ড দেখায় এক ঘণ্টার বেশি সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় স্বাগতিকদের। তাদের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন ব্রুনো ফার্নান্দেস।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ভরপুর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি ম্যাচের আভাস পাওয়া গিয়েছিল শুরুতে। কিন্তু মার্শিয়ালের লাল কার্ডের পর ইউনাইটেড তৃতীয় গোল হজম করে লড়াই থেকে ছিটকে যায়। একতরফা ম্যাচে এরপর গোল উৎসব করে অতিথিরা। তাদের নেওয়া ২২টি শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ম্যান ইউনাইটেড নিতে পারে মাত্র পাঁচটি শট, লক্ষ্যে ছিল দুটি।
খেলা শুরুর ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। মার্শিয়ালকে দেভিনসন সানচেজ ফাউল করায় স্পট-কিকের নির্দেশ দেন রেফারি। ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ফার্নান্দেস।
ইউনাইটেডের উল্লাস স্থায়ী হয়নি। দুই মিনিট পরই এনদমবেলের লক্ষ্যভেদে সমতায় ফেরে স্পার্সরা। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে জোরালো শটে ইউনাইটেড গোলরক্ষককে দাভিদ দে হেয়াকে পরাস্ত করেন তিনি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে এগিয়েও যায় টটেনহ্যাম। সময়ক্ষেপণ না করে বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিকে সনকে খুঁজে নেন কেইন। ডি-বক্সে ঢুকে দারুণ শটে শটে জাল কাঁপান দক্ষিণ কোরিয়ার এই ফরোয়ার্ড।
২০তম মিনিটে মার্কাস র্যাশফোর্ডের প্রচেষ্টা পোস্টে বাধা পেলে সমতায় ফেরা হয়নি ইউনাইটেডের। উল্টো ২৮তম মিনিটে বিশাল ধাক্কা খায় তারা। এরিক লামেলার মুখে আলতো টোকা দেওয়ায় লাল কার্ড পান ফরাসি ফরোয়ার্ড মার্শিয়াল। তবে রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরির সুযোগ রয়েছে। কারণ, লামেলাই প্রথমে মার্শিয়ালের গলায় কনুই দিয়ে গুঁতো দিয়েছিলেন।
দুই মিনিট পর ফের স্বাগতিকদের রক্ষণের ভুলে ব্যবধান বাড়ায় টটেনহ্যাম। নিজেদের ডি-বক্সে এরিক বাইয়ি পাস দিতে চেয়েছিলেন নেমানিয়া মাতিচকে। কিন্তু মাঝপথে বল কেড়ে নেন সুযোগসন্ধানী কেইন। এরপর সনের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে স্কোরলাইন ৩-১ করেন তিনি।
৩৭তম মিনিটে অরিয়েরের ক্রসে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন সন। দে হেয়ার দুই পায়ের নিচ দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ইউনাইটেড ঘুরে দাঁড়াতে তো পারেনি, উল্টো আরও দুই গোল হজম করে।
৫১তম মিনিটে পিয়েরে-এমিল হোইবার্গের রক্ষণচেরা পাসে জাল খুঁজে নেন অরিয়ের। ৭৯তম মিনিটে পেনাল্টি পায় অতিথিরা। পল পগবা বেন ডেভিসকে ডি-বক্সে ফেলে দেওয়ায় রেফারি বাজান স্পট-কিকের বাঁশি। বুলেট গতির শটে স্কোরলাইন ৬-১ করেন ইংলিশ স্ট্রাইকার কেইন।
চার ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে টটেনহ্যামের অর্জন ৭ পয়েন্ট। তারা আছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে। এক ম্যাচ কম খেলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৬তম স্থানে রয়েছে প্রিমিয়ার লিগের সফলতম ক্লাব ইউনাইটেড।
Comments