তামাক গুড়ায় দূষিত পরিবেশ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় সড়কের পাশে উন্মুক্ত পরিবেশে মেশিনে তামাকের পাতা ও ডাটা গুড়া করায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও ফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। বাধ্য হয়েই তারা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের তালুক বানিনগর জানেরপাড় গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম সড়কের পাশে চাতালে ধানের পরিবর্তে তামাক পাতা ও ডাটা গুড়ো করছেন। গ্রামে উন্মুক্ত স্থানে তামাক পাতা ও ডাটা গুড়া করায় এর বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাস মিশে পরিবেশ দূষণ করছে। তামাক পাতা গুড়া করার জন্য মেশিন চালু হওয়া মাত্রই ধুলোয় অন্ধকার হয়ে যায় পুরো গ্রাম। পথচারীদের নাক মুখ ঢেকে চলাচল করতে হয়। তামাকের দুর্গন্ধে আশপাশের মানুষজন ঘর-বাড়িতেও থাকতে পারছেন না।
বাতাসে তামাক গুড়ার ছড়িয়ে গ্রামটির অনেক শিশু ও বয়স্ক মানুষ সর্দি ও শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। পাশের একটি ডেইরি ফার্মে পাঁচ হাজার সোনালী মুরগীর খামারে মারা যাচ্ছে মুরগী। দৈনিক ১০-১২টি মুরগি শ্বাসকষ্টে মারা যাচ্ছে।
একই অবস্থা পাশের একটি মৎস খামারেও। বাতাসের সঙ্গে উড়ে এসে তামাক পাতার গুড়া পুকুরের পানিতে মিশে যাওয়ায় মাছ মরতে শুরু করেছে। পানি বিশুদ্ধিকরণ ওষুধ দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারছেন না খামারি মনসুর আলী।
ডেইরি ফার্মের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, ‘উন্মুক্ত পরিবেশে তামাক পাতা ও ডাটা গুড়া করার মেশিন চালু না রাখতে অনুরোধ করেও কোনো ফল পাইনি। উল্টো আমাদের নামে মামলা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন মেশিন মালিক হাফিজুল ইসলাম।’
স্থানীয় অধিবাসী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কের পাশে উন্মুক্ত জায়গায় তামাক পাতা গুড়া করায় এখানে বসবাস করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। অনেক বার নিষেধ করা হলেও অদৃশ্য ক্ষমতার জোড়ে মেশিন চালাচ্ছেন হাফিজুল।’
মেশিন মালিক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিজের চাতালে তামাক পাতা ও ডাটা গুড়া করে বিক্রি করি। এতে গ্রামের পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে বিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। প্রয়োজন হলে ছাড়পত্র নেওয়া হবে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উন্মুক্ত স্থানে বা খোলামেলা পরিবেশ তামাক পাতা গুড়ো করার নিয়ম নেই। কেউ করে থাকলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments