চাঁদপুর থেকে ভারতে যাচ্ছে টনে টনে ইলিশ, তথ্য নেই সরকারি কোনো বিভাগে

চাঁদপুর ঘাটে প্রতিদিন গড়ে সাতশ থেকে আটশ মণ ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে। ছবি: আলম পলাশ

চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। জেলেদের জালে প্রতিদিন সাগর ও নদী থেকে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। ধরা পড়া ইলিশের একটি বড় অংশের কেনাবেচা হয় দেশের অন্যতম প্রধান ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন ঘাটে। গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে এই বাজারে ইলিশ কিনতে যোগ হয়েছে ভারতীরা। প্রতিদিন ভারতে পাঁচ টনের মতো ইলিশ যাচ্ছে বলে জানান বাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে, চাঁদপুরের সরকারি কোনো বিভাগ এ ব্যাপারে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।

সোমবার চাঁদপুর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের পাশেই রেলের পরিত্যক্ত জায়গায় তাবু টানিয়ে টনে টনে বড় আকারের ইলিশ স্তূপ করে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। পাশেই ডাকাতিয়া নদীতে নৌপথে ভোলার জেলেরা বড় বড় ট্রলারে করে শতশত মণ ইলিশ নামাচ্ছেন।

চাঁদপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ টন করে ইলিশ সড়ক পথে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান ভারতীয় ক্রেতার এক প্রতিনিধি। ছবি: আলম পলাশ

ভোলার মনপুরার কয়েকজন জেলে জানান, তারা গতকাল প্রায় তিনটি ট্রলারে করে প্রায় তিনশ মণ ইলিশ এনে এই মাছ ঘাটে বিক্রি করেন। অন্যপাশে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে সড়ক পথে ট্রাকে করে শতশত মণ ইলিশ আসছে। পরে এসব ইলিশ মাছ ঘাটের ভেতরে আড়তদাররা ডাক তুলে বিক্রি করেন। তা কিনতে স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি সারাদেশের ক্রেতারাও ভিড় করেন।

স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান কালু ভুঁইয়া বলেন, ‘চাঁদপুর ঘাটে প্রতিদিন গড়ে সাতশ থেকে আটশ মণ ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে দেড়শ মণ ইলিশ চলে যাচ্ছে ভারতে। এতে স্থানীয় বাজারে দামের কিছুটা প্রভাব পড়েছে। কারণ, তারা ১ কেজির অধিক ওজনের ইলিশ বেশি নিয়ে যাচ্ছে। যার মূল্য প্রতি কেজি আটশ থেকে সাড়ে আটশ টাকা পড়ছে।’

ভারতীয় ক্রেতার প্রতিনিধি সফিউল্লাহ জানান, তারা ১৭৫ টন মাছ ভারতে পাঠানোর অনুমোদন পেয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে এলসির মাধ্যমে চাঁদপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ টন করে ইলিশ সড়ক পথে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাঠাচ্ছেন। গত ৫ অক্টোবর সোমবারও তারা পাঁচ টন ইলিশ পাঠিয়েছেন।

কিন্তু এর কোনো সঠিক হিসেব স্থানীয় বাজারের কোনো ব্যবসায়ী এমনকি সরকারি কেউই দিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিসে বা মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে এর কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, ‘আমরা শুনেছি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ভারতে কিছু ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে। তবে এর লিখিত কোনো কিছু আমাদের জানা নেই।’

একই কথা বললেন মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘ভারতে ইলিশ রপ্তানির ব্যাপারে আমরাও কিছু জানি না।’

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago