নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সারাদেশে সুজনের মানববন্ধন
ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। আজ শনিবার সকাল ১১টা থেকে দেশের সবজেলা ও উপজেলায় একঘণ্টার এই কর্মসূচি পালিত হয়।
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে কর্মসূচিতে ধর্ষণসহ সব ধরনের নারী নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। আজ এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছে সুজন।
কর্মসূচিতে দেশের আইনের শাসনের অবনতির তীব্র নিন্দা জানান বক্তারা।
তারা বলেন, আইন -শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম বিপর্যয় ঘটায় ধর্ষক ধরা পড়লেও আর্থিক বা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে বেরিয়ে এসে ভিকটিমের পরিবারকেই আবার নির্যাতন করছে- এই চলমান পরিস্থিতির আমুল পরিবর্তন দাবি করে সুজন।
বক্তারা আরও বলেন- পরিস্থিতির এতো অবনতির পেছনে বিচারহীনতার সংস্কৃতিই দায়ী। এখনো বিচার নিশ্চিত হয়নি তনু হত্যার, সুবর্ণচরের গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাসহ অনেক ধর্ষণ মামলার। তাই এই সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সবার আগে দরকার সম্মিলিত সদিচ্ছা।
মানববন্ধনে সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি রাশিদা আক্তার শেলী, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃস্থানীয়রা।
বক্তারা নারী নির্যাতনের প্রত্যেকটি ঘটনার যথোপযুক্ত তদন্তপূর্বক দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
এছাড়াও ধর্ষকসহ নারী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বিচার নিশ্চিত করা, ধর্ষক- নিপীড়ক-নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ এবং ক্ষমতার প্রশ্রয়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অবসান ক্ষমতাসীনদেরই ঘটাতে হবে বলে আহ্বান জানান।
সুজনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ধর্ষকপোষা রাজনীতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের
মনে রাখতে হবে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি ব্যর্থ রাষ্ট্রেরই লক্ষণ। দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি নয়, জনকল্যাণমুখী-আদর্শভিত্তিক রাজনীতি চাই। সংবিধানে উল্লেখিত নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের যথাযথ বাস্তবায়ন চাই। প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষা পাঠক্রমে মানবাধিকার ও নৈতিক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলাগুলো বিচার করতে হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। রাজনৈতিক দল ও প্রশাসন ধর্ষকদের ব্যাপারে কোন ধরণের সহনশীলতা দেখাতে পারবে না। মানববন্ধনে সবাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
সুজন ছাড়াও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক, ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার মানববন্ধন পালন করে।
Comments