খেলা

তারকা ব্যাটসম্যানদের বেহাল দশার দিনে উজ্জ্বল সোহান

উইকেটে বোলারদের জন্য আহামরি বিষ না থাকলেও বাজে খেলার প্রতিযোগিতাই যেন হলো ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। লম্বা সময় পর সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে ফেরার জড়তায় আড়ষ্ট ছিলেন তারা।
Nurul Hasan Sohan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

একদল করল ১০৩। আরেক দল ওই রান তাড়া  করতে গিয়েই মরি মরি অবস্থা। তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুনদের পথেই যেন হাঁটলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুনরা। উইকেটে বোলারদের জন্য আহামরি বিষ না থাকলেও বাজে খেলার প্রতিযোগিতাই যেন হলো ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। লম্বা সময় পর সীমিত সংস্করণের ক্রিকেটে ফেরার জড়তায় আড়ষ্ট ছিলেন তারা। চরম বিপর্যয়ের মধ্যে কিছুটা আলো ছড়িয়েছেন মুমিনুল হক ও  নুরুল হাসান সোহান। ৪১ রান করেই ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছেন সোহান।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তামিম একাদশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ।  ৩৮ বলে ৬ বাউন্ডারি, ১ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েছেন কিপার ব্যাটসম্যান সোহান।

এমন ম্যাচে বোলারদের কেউই নায়ক বনবেন, এটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। তামিম একাদশকে ১০৩ রানে আটকে দেওয়ার মূল নায়ক হিসেবে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা রুবেল হোসেন।

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১০৪ রানের সহজ লক্ষ্যে নেমে শূন্য রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে যান লিটন। রানকে ওই জায়গাতেই আটকে পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে এলবিডব্লিও নাঈম শেখ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হলেন এই দুই ওপেনার।

সাইফুদ্দিনের পরের ওভারে ইমরুল কায়েসকেও ছেঁটে ফেলেন। তবে এই উইকেটের বড় কৃতিত্ব মোহাম্মদ মিঠুনের। শর্ট কাভারে অনেকখানি লাফিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন তিনি। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ পরে বোল্ড হয়ে যান তাইজুল ইসলামের বলে।

পঞ্চম উইকেটে সোহানকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটিতে মুমিনুল দলকে দিচ্ছিলেন ভরসা। তবে ভুল সময়ে তিনিও শিকার তাইজুলের।

তাইজুলের বলেই পড়েছে সাব্বির রহমানের একাধিক ক্যাচ। না হলে খেলার শেষটা আরও কঠিন হয়ে পড়ত মাহমুদউল্লাহদের। অবশ্য আর বিপদ বাড়তে না দিয়ে সাব্বিরকে নিয়ে ম্যাচ জেতান সোহান।

এর আগে বৃষ্টি বিঘ্নিত ইনিংসে রুবেল আর সুমন খানের তোপে পড়ে তামিমের দল।

শুরু থেকেই দারুণ বল করেছেন মাহমুদউল্লাহ একাদশের পেসাররা। উইকেট না পেলেও তামিমকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করে পেসারদের ভাল দিনের আভাস দেন ইবাদত হোসেন।

তামিম অবশ্য ফিরেছেন রুবেলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। বৃষ্টি থামার পর নেমে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তানজিদ। অন ড্রাইভ আর পুলে মেরেছেন চোখ ধাঁধানো তিন বাউন্ডারি। তবে  এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ফিরেছেন বেশ দৃষ্টিকটু শটে। রুবেলের বলে ফ্লিকের মতন করতে গিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে সহজ ক্যাচ দেন মিড উইকেটে।

জাতীয় দলের বাইরে থাকা এনামুল হক বিজয়ের নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ ছিল। শুরুতে ভুগলেও থিতু হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুমন খানের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২৫ রান করে।

সুমনের দারুণ লাফানো বলে ফিরে যান যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন দিপু। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সুমনের অনেক বাইরের বল তাড়া করে দেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর মাহাদি হাসান মিলে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, পেরে উঠেননি। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের দারুণ এক ডেলিভারিতে কাবু হন মাহাদি। সাইফুদ্দিন বোল্ড হয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজের বলে। টেল এন্ডাররাও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

তামিম একাদশ: ২৩ ওভারে ১০৩  (তামিম ২, তানদিজ ২৭, বিজয় ২৫, মিঠুন ০, দিপু ১, মোসাদ্দেক ৫, সাইফুদ্দিন ১২, মেহেদী ১৯, তাইজুল ১, শরিফুল ৪, মোস্তাফিজ ০* ; ইবাদত ০/৩৬, রুবেল ৩/১৬, সুমন ৩১/৩, মেহেদী ২/২, বিপ্লব ২/১৭)

মাহমুদউল্লাহ একাদশ:  ২৭ ওভারে ১০৬/৫ (লিটন ০, নাঈম ০, মুমিনুল ৩৯, ইমরুল ০ , মাহমুদউল্লাহ ১০, নুরুল ৪১*, সাব্বির ৪* ; সাইফুদ্দিন ২/৮, মোস্তাফিজ ১/১৪, শরিফুল ০/২৮, মাহাদি ০/১৮, তাইজুল ২/২৭ , মিনহাজুল ০/৫)

ফল: মাহমুদউল্লাহ একাদশ ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: রুবেল হোসেন

সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা ফিল্ডার: নুরুল হাসান

সেরা বোলার: সুমন খান।

 

 

 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English
Is human civilisation at an inflection point?

Is human civilisation at an inflection point?

Our brains are being reprogrammed to look for the easiest solutions to our most vexing social and political questions.

9h ago