থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

থাইল্যান্ডে চার জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ-সমাবেশ প্রতিহত করতে একটি জরুরি ডিক্রি জারি করা হয়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা রাজকীয় মোটর শোভাযাত্রার উদ্দেশে ‘তিন আঙুলের’ অভিবাদন প্রদর্শন করেন। ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডে চার জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ-সমাবেশ প্রতিহত করতে একটি জরুরি ডিক্রি জারি করা হয়।

বিবিসি জানায়, থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের সমালোচনা করায় গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভে দমন-পীড়নও বেড়েছে। টেলিভিশনে সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে’ জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

চার জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধের পাশাপাশি ডিক্রিতে সংবাদমাধ্যমের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না ‘যা জাতীয় সুরক্ষা বা শান্তি-শৃঙ্খলাকে প্রভাবিত করবে, ভয় সৃষ্টি করতে পারে, ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য বিকৃত করতে পারে কিংবা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে।’

ডিক্রি অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের এলাকায় লোকজনের প্রবেশেও সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সকালে জরুরি ডিক্রি ঘোষণার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রীর প্রয়ূথ চ্যান-ওচার কার্যালয়ের বাইরে রাতে তাঁবু গেড়ে অবস্থান করা কট্টর বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে দাঙ্গা পুলিশ।

আন্দোলনকারীরা অস্থায়ী ব্যারিকেড ব্যবহার করে প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সেগুলোও সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পরেও কয়েক শ পুলিশকে রাস্তায় দেখা গেছে।

এ ছাড়াও, গণতন্ত্রপন্থি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তিন নেতাসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

থাইল্যান্ডে রাজা বা রাজ পরিবারের বিরুদ্ধাচরণ গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। রাজার সমালোচনা করলে দীর্ঘ কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে দেশটিতে।

তবে, ছাত্রদের নেতৃত্বে গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। চলতি সপ্তাহেও দেশটির রাজধানী ব্যাংককে গত কয়েক বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল ব্যাংককে থাই রাজার গাড়িবহরকে উদ্দেশ্য করে বিক্ষোভ করেন কয়েক হাজার মানুষ। বিরোধীরা থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি বছরের বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকা রাজা ভাজিরালংকর্নের ক্ষমতা কমানোর দাবি জানান। পাশাপাশি ২০১৪ সালে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগও দাবি করা হয়।

এদিকে, গতকাল বিক্ষোভকারীদের বিপরীতে রাজ পরিবারের সমর্থকরাও ব্যাংককের রতচাদম্নোয়েন অ্যাভিনিউয়ে সমবেত হয়েছিলেন। তাদের অনেকেই রাজকীয় হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে এসেছিলেন।

বিবিসি জানায়, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা রাজকীয় মোটর শোভাযাত্রাকে চ্যালেঞ্জ জানান এবং ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ চলচ্চিত্র থেকে নেওয়া ‘তিন আঙুলের’ অভিবাদন প্রদর্শন করেন, যা দেশটিতে অতি শ্রদ্ধেয় রাজার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অবাধ্যতা হিসেবে বিবেচিত।

জানা গেছে, গত শনিবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ১৮ হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিলেন।

থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক ঘোষণায় বলা হয়, ‘বিক্ষোভকারীরা ‌‌বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে ও জনগণের শান্তি নষ্ট করছে’।

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago