সাতক্ষীরায় একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় মামলা, তদন্ত সিআইডিতে
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় একই পরিবারের চার জনকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কারও নাম উল্লেখ না করে মামলাটি করেন নিহত শাহিনুর রহমানের শাশুড়ি ময়না খাতুন। রেকর্ড হওয়ার পরপরই মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান পাল।
গতকাল সন্ধ্যার পর নিহত শাহিনুরের মামারবাড়ি ব্রজবক্স গ্রামে মরদেহগুলো পৌঁছায়। পরে রাত ৩টার দিকে মামাদের পরিবারিক গোরস্থানে নিহতদের মরদেহ দাফন করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা সিআইডির পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মামলাটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু, এখনো তদন্ত শুরু হয়নি। ঘটনাটি ছোট নয় এবং স্পর্শকাতর। দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়, সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করব।’
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেলে নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অসংলগ্ন কথা বলেছেন। তাকেও সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জমি, মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক বিরোধ— এই তিনটি বিষয় দেখা হচ্ছে।
কলারোয়া থানার ওসি হারান পাল জানান, বুধবার রাতের কোনো এক সময়ে কলারোয়া উপজেলায় খলিশা গ্রামে বাবা-মা ও তাদের দুই সন্তানকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত চার জন হলেন— শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৫), ছেলে সিয়াম হোসেন (১০) ও মেয়ে তাসলিমা (৮)।
নিহত শাহিনুর রহমানের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম গতকাল জানান, বাড়িতে মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের চার জনসহ তারা ছয় জন থাকতেন। তিনি থাকেন শাহিনুরের ভবনের পাশেই আলাদা একটি ঘরে। তাদের মা বুধবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। তিনি (রায়হানুল) ছিলেন তার ঘরে। ভোরে পাশের ভবন থেকে তিনি গোঙানি ও কান্নার শব্দ শুনতে পান তিনি। এরপর গিয়ে দেখেন, ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকানো। গাছ বেয়ে ছাঁদে উঠে বাড়ির ভেতরে ঢোকেন তিনি। দরজা খুলে তিনি এ মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেন। মা ও দুই শিশু সন্তানের মরদেহ এক ঘরে ও অন্য ঘরে শাহিনুরের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। আর মায়ের শরীরের ওপর কান্নাকাটি করছে তাদের ছয় মাসের শিশু মারিয়া। মারিয়াকে রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করে তিনি স্থানীয় থানায় খবর দেন।
‘আমাদের সঙ্গে জমি নিয়ে এক প্রতিবেশীর বিরোধ ছিল। কিন্তু, কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না’, বলেন রায়হানুল।
আরও পড়ুন:
Comments