চোখ ধাঁধানো ব্যাট করেও আফিফের ২ রানের আক্ষেপ

বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে তৃতীয় ম্যাচে এসে রানের দেখা পান এই বাঁহাতি তরুণ
afif hossain
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাট করতে এসে প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন। সুমন খানের জোরালো এলবিডব্লিউ আবেদন বাতিল হওয়ার পর আর একবারও পরাস্ত হননি আফিফ হোসেন। দৃষ্টিনন্দন সব শটের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন তিনি। অনায়াসে সেঞ্চুরি এবং তারচেয়ে বেশি কিছুর আভাস ছিল তার ব্যাট। কিন্তু সেঞ্চুরির মাত্র ২ রান আগে মুশফিকুর রহিমের ভুলে আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে আফিফকে।

বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে তৃতীয় ম্যাচে এসে রানের দেখা পান এই বাঁহাতি তরুণ। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাহমুদউল্লাহ একাদশদের বিপক্ষে আফিফ ১০৭ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় করেছেন ৯৮ রান। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা মুশফিক এদিন ছিলেন অনেক মন্থর। ৯৩ বলে ৫২ রান করেছেন তিনি। সাতে নেমে ইরফান শুক্কুর করেছেন ৩১ বলে ৪৮ রান।

তাদের ব্যাটে শান্ত একাদশ  ৫০ ওভার খেলে করে ৮ উইকেটে ২৬৪ রান। জবাবে মাত্র ১৩৩ রানে গুটিয়ে ১৩১ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ।   

টস হেরে এদিন নাঈম শেখের বদলে পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে ওপেন করতে নামেন সৌম্য সরকার। কিন্তু আরও  একবার ব্যর্থ হন সৌম্য। রুবেল হোসেনের বলে মাত্র ৮ রান করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও থেকেছেন মলিন। এবার রুবেলের বলে স্টাম্পে টেনে ফেরত যান তিনি।

afif hossain
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চতুর্থ উইকেটে এসে বড় জুটি পায় শান্তরা। আফিফ-মুশফিক আনেন ১৪৭ রান। যার মধ্যে আফিফ একাই করেছেন ৯৮ রান। ১ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে জীবন পাওয়া মুশফিক ধুঁকেছেন বিস্তর। অপর প্রান্তে আফিফ ছিলেন সাবলীল। নান্দনিক কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি পাঠিয়েছেন সুমন খানকে। রুবেলকে উড়িয়েছেন পুলে। স্পিনারদের বলে স্কুপ করে বাড়িয়েছেন রান।

৬৯ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পরের ৩৮ বলে তুলেছেন ৪৮ রান। সেঞ্চুরি মনে হচ্ছিল তার হাতের মুঠোয়। নিজে কোন ভুল না করেও সেঞ্চুরি বঞ্চিত থেকে হয়েছে তাকে। মিরাজের বলে শর্ট মিড  উইকেটের দিকে ঠেলে প্রান্ত বদল করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। আফিফকে কল দিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন তিন-চার ধাপ। সেখানে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহকে তৎপর দেখে পিছিয়ে যান তিনি। ওদিকে আফিফ অনেকটা স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছুটে যাওয়ায় আর ফিরতে পারেননি।

সঙ্গীকে বিদায় করে নিজেও বেশিক্ষণ থাকেননি মুশফিক। ইবাদত হোসেনের লাফানো বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটে পেছনে ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

পরে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে সাতে নামা ইরফান শুক্কুর ঝড় তুলে এগিয়ে নেন দলকে। ৭০ রানের জুটি করেন তারা। হৃদয় ২৯ বলে ২৭ করে ফিরে গেলেও ইরফান এগুচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ৪৮ রানে। তার ব্যাটে দল ২৬০ পেরিয়ে যায়।

২৬৫ রানের লক্ষ্যে ইমরুল কায়েস ফেরেন শুরুতেই। আবু জায়েদ রাহির বলে উইকেটের পেছনে খোঁচা মারার পুরনো রোগে কাবু তিনি। লিটন দাস ছিলেন বেশ সাবলীল। কাভার ড্রাইভ, অন ড্রাইভে নান্দনিক শটে ৫ বাউন্ডারি বের করে রানে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের বলে লাইন মিস করে হয়ে যান এলবিডব্লিউ।

ওয়ানডাউনে নামা মুমিনুল হক ছিলেন না স্বচ্ছন্দ। ধুঁকতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে মুক্তি দেন রাহি। তার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৩২ বলে ১৩ রানে শেষ হয়েছে তার ইনিংস। যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের মাহমুদুল হাসান জয় প্রথমবার নেমে হতাশ করেছেন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটও ছিল নীরব। 

স্রোতের বিপরীতে আরও একবার দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজদের কেউ। টপাটপ উইকেট পতনের স্রোতে খেলা শেষ হয়েছে বেশ আগেভাগে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর  

শান্ত একাদশ : ৫০ ওভারে ২৬৪/৮ (ইমন ২১, সৌম্য ৮, শান্ত ৩ , মুশফিক ৫২, আফিফ  ৯৮, হৃদয় ২৭  , ইরফান ৪৮*, রিশাদ ১,তাসকিন ১ , নাসুম ০* ; ইবাদত ০/৬২, রুবেল ৩৫২, সুমন ১/৫৩, রাকিবুল ০/৩০, মিরাজ ০/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ০/১৮ )

মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ৩২.২ ওভারে ১৩৩ (ইমরুল ৪, লিটন ২৭, মুমিনুল ১৩, মাহমুদুল ১৩, মাহমুদউল্লাহ ১১, সোহান ২৮*, সাব্বির ১২, মিরাজ ১৬, রাকিবুল ০, সুমন ২, রুবেল ১ ; তাসকিন ০/২৫, আল-আমিন ১/২০, নাসুম ৩/২৩, রাহি ৩/৩৪  রিশাদ ২/২৬) 
 
ফল: শান্ত একাদশ ১৩১ রানে জয়ী। 
 
ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সেরা ব্যাটসম্যান: আফিফ হোসেন।


সেরা বোলার: রিশাদ হোসেন
 
সেরা ফিল্ডার: নাজমুল হোসেন শান্ত
 

Comments

The Daily Star  | English

Govt job seekers block Shahbagh with demand to raise age limit to 35yrs

Hundreds of job seekers today demonstrated at Dhaka's Shahbagh, blocking the intersection to press home their demand for raising the age limit for applying form government jobs from 30 to 35

2h ago