এবার টপ অর্ডারের জড়তা কাটানোর পালা
বোলাররা শুরু থেকেই আছেন ছন্দে। বিশেষ করে পেসাররা প্রতি ম্যাচেই রাখছেন প্রভাব। শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠিত সব ব্যাটসম্যানই রান পেতে ধুঁকছিলেন। সেই খরা কাটিয়ে সেঞ্চুরি এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে, দারুণ ব্যাট করেছেন আফিফ হোসেনও, টুকটাক রান মিলেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। তবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে এখনো নিষ্প্রভ বাংলাদেশের টপ অর্ডার।
করোনার কারণে সাত মাসের স্থবিরতা কাটিয়ে ফেরা প্রস্তুতিমূলক আসরে এখনো বলার মতো ব্যক্তিগত নৈপুণ্য বলতে মুশফিকের সেঞ্চুরি। তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেনর অবশ্য প্রতি ম্যাচেই রেখেছেন ধারাবাহিকতা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো ছন্দে দেখা যাচ্ছে তাদের।
কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা এখনো ঘুরপাক খাচ্ছেন জড়তার বৃত্তে। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল দুই ম্যাচ খেলে করেছেন ২ ও ৩৩ রান। প্রথম ম্যাচে শুরুতে আউট হলেও পরে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারায় দায়ে পড়বেন তিনি।
ওয়ানডেতে তার নিয়মিত ওপেনিংসঙ্গী লিটন দাস যেন দিকহারা পথিক। করোনার আগে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে তিনি ছিলেন অনেকটা রান মেশিন। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে কাবু করেছে অপ্রত্যাশিত বিরতি। প্রথম ম্যাচে ১১ রান করার পর পরের ম্যাচে ফেরেন ০ রানে। তৃতীয় ম্যাচে এসে অনেকটা সাবলীল দেখাচ্ছিল তাকে। নিজের ট্রেডমার্ক নান্দনিক সব শটের পসরাও মেলে ধরেছিলেন। কিন্তু ইনিংস যেন মেলে উঠার সময় তখনই শেষ। ২৭ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ফুটওয়ার্কের ঘাটতিতে।
সৌম্য সরকারের অবস্থা বোধহয় সবচেয়ে করুন। প্রথম ম্যাচে একটু সময় নিয়ে ছন্দ মোটামুটি পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু বাজে এক বলে টাইমিংয়ের গোলমালে টেনেছেন ইতি। পরের ম্যাচে অবিশ্বাস্যরকম মন্থর অ্যাপ্রোচ ছিল তার। ৪৮ বল খেলে উইকেটে হাঁসফাঁস করতে করতে ফেরেন ৯ রানে। তৃতীয় ম্যাচে ৮ রান করে স্টাম্পে টেনে হয়েছেন বোল্ড।
নাঈম শেখ প্রথম দুই ম্যাচে ৯ ও ০ রান করার পর তৃতীয় ম্যাচে একাদশেই জায়গা হারিয়েছেন। ইমরুল কায়েস প্রথম ম্যাচে রান পেয়েছিলেন। মোটামুটি সাবলীলভাবেই ব্যাট করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। ৪০ রানে করেই আর এগুতে পারেননি। পরের দুই ম্যাচে তার রান ০ ও ৪। আউটের ধরণও খুব সুখকর না। এই বাঁহাতি ভুগছেন খোঁচা মারার পুরনো রোগেই।
নাজমুল হোসেন শান্ত এবার একটা দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছেন। নিজেকে অনেক বড় করে মেলে ধরার সুযোগ ছিল তার অবারিত। সেই সুযোগ এখনো নিতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে ২৮ রান করার পর বাকি দুই ম্যাচে তার স্কোর ১ ও ৩। আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যাচ্ছে তার ব্যাটিংয়েও। শেষ ম্যাচে উইকেটে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন তিনিও।
এছাড়া এখনো রান পাননি মোহাম্মদ মিঠুন, ওয়ানডে দলে ফেরার লড়াইয়ে থাকা টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকও এই ফরম্যাটে নিজের কার্যকারিতা বোঝাতে পারেননি।
লম্বা বিরতি ছিল। সেকারণেই এই টুর্নামেন্ট দিয়ে এসব ব্যাটসম্যানদের বিচার করা হয়ত ন্যায্য হবে না। কিন্তু জড়তা উপেক্ষা করে যদি ইরফান শুক্কুররা রান পান তাহলে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের উপর কিছুটা হলেও চাপ বাড়বে। যত দ্রুত তারা রানে ফিরবেন, তাতে যতটা স্বস্তি তাদের নিজেদের। তারচেয়ে বেশি স্বস্তি পাবে দেশের ক্রিকেট।
Comments