ধর্ষণে সর্বোচ্চ সাজার বিধানে প্রধানমন্ত্রীকে ২৩ নাগরিকের অভিনন্দন

দেশজুড়ে অব্যাহত ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদ। ছবি: শেখ এনামুল হক/স্টার ফাইল

ধর্ষণে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেশের ২৩ জন সাহিত্যিক, শিক্ষক, কবি ও শিল্পী অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর তড়িৎ সিদ্ধান্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ায় এই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে বলে তারা আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন।

বিবৃতি দাতারা হলেন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরি, শামসুজ্জামান খান, হাসান আজিজুল হক, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সারোয়ার আলী, ফেরদৌসী মজুমদার, আবদুস সেলিম, মামুনুর রশীদ, নির্মলেন্দু গুন, মফিদুল হক, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, মোহাম্মদ নূরুল হুদা, শফি আহমেদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, লাকী ইনাম, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ, মান্নান হীরা, হাসান আরিফ, মোহাম্মদ সামাদ ও আহকোমউল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি ধর্ষণ প্রতিরোধে বেশ কিছু করণীয় বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে তারা পরামর্শও দিয়েছেন।

ধর্ষণে সর্বোচ্চ সাজার বিধান রেখে অধ্যাদেশ সম্পর্কে বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আইনের সঠিক ও সময়োপযোগী প্রয়োগের উপর নির্ভর করছে এর কার্যকারিতা।বাংলাদেশে অনেক আইন রয়েছে কিন্তু এর সঠিক প্রয়োগ ঘটছে না। তাতে করে আইন তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও প্রয়োগকারীর উপর জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলছে।’

ধর্ষণ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনটিকে ধর্ষণের শিকার নারীর অনুকূলে সংশোধনের দাবি জানিয়ে তারা এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার তাগিদ দেন।

তবে শুধুমাত্র আইন সংস্কার ও শাস্তি প্রদান করে এই জঘন্য অপরাধ থামানো যাবে না মনে করে তারা এর জন্য সরকারকে দেশে সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিশুদ্ধতার আনতে বলেছেন।

ধর্ষণ প্রতিরোধে তারা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে—ধর্ষক ও সন্ত্রাসী যেন কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এ ঘৃণ্য অমানবিক কাজ করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শতভাগ সততা ও বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করা। আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রশাসন ও রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখা। ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। বিভিন্ন ধর্ম সভায় মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের ভুল ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ব্যাখ্যা দিয়ে নিরন্তর নারী-অবমাননাকর বক্তব্য থেকে মৌলবাদীদের নিবৃত করতে দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে ও নির্যাতিত নারীর সামাজিক লাঞ্ছনা থেকে রক্ষাকল্পে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সকল সামাজিক- সাংস্কৃতিক শক্তি সমূহের কর্মসূচিকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানে তৎপর হওয়া। প্রাথমিক-উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ব বিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যসূচির আধুনিকায়ন। মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে সরকার নিয়ন্ত্রিত করা এবং নারীর প্রতি সম্মানের মানসিকতা গড়ে তুলতে সকল পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমে, নারী-পুরুষের সমঅধিকারের বিষয়টি জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা। একমুখী শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা। পেশী শক্তির বিপরীতে জ্ঞান ও যুক্তি নির্ভর সমাজ গড়ে তুলতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা।এ ক্ষেত্রে সংস্কৃতি কর্মী ও সংগঠনের দায় ও দায়িত্ব সর্বাধিক। সরকারের এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করাও জরুরি।

Comments

The Daily Star  | English

Israel stands down alert after Iran missile launch

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

22h ago