দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর প্রায় ৫ হাজার মিটার

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর তিন ও চার নম্বর পিলারের ওপর আজ সোমবার বসানো হয়েছে ৩৩তম স্প্যান ‘ওয়ান-সি’। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৪ হাজার ৯৫০ মিটার। অনুকূল আবহাওয়া আর কারিগরি জটিলতা দেখা না দেওয়ায় স্প্যানটি বসাতে প্রকৌশলীদের বেগ পেতে হয়নি। ৩২তম স্প্যান বসানোর আট দিনের মাথায় বসলো এই স্প্যানটি।
৩৩তম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। ছবি: স্টার

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর তিন ও চার নম্বর পিলারের ওপর আজ সোমবার বসানো হয়েছে ৩৩তম স্প্যান ‘ওয়ান-সি’। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৪ হাজার ৯৫০ মিটার। অনুকূল আবহাওয়া আর কারিগরি জটিলতা দেখা না দেওয়ায় স্প্যানটি বসাতে প্রকৌশলীদের বেগ পেতে হয়নি। ৩২তম স্প্যান বসানোর আট দিনের মাথায় বসলো এই স্প্যানটি।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন মূল সেতুর  নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের। তিনি জানান, আজ বেলা ১২টা ৪ মিনিটে ৩৩তম স্প্যানটি বসানো হয়েছে।

পদ্মাসেতুর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেনটি কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে নিয়ে যায়। নির্ধারিত পিলারের কাছে এসে পৌঁছায় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে। ইয়ার্ড থেকে প্রায় ৯০০ মিটার দূরত্ব সেতুর ৩ ও ৪ নম্বর পিলারের। তাই একদিনের মধ্যেই বসিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের বসানো আছে তিনটি স্প্যান। আর এর পাশেই বসানো হয় এই স্প্যানটি। পদ্মানদীতে স্প্যান বসানোর কার্যক্রমে কোনো প্রাকৃতিক কারণ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

পদ্মা সেতুতে আর আটটি স্প্যান বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর ৭ ও ৮ নম্বর পিলারের ওপর ৩৪তম স্প্যান (স্প্যান ২-এ), ৩০ অক্টোবর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের ওপর ৩৫তম স্প্যান (স্প্যান ২-বি), ৪ নভেম্বর ২ ও ৩ নম্বর  পিলারের ওপর ৩৬তম স্প্যান (স্প্যান ১-বি), ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০ নম্বর পিলারের ওপর ৩৭তম স্প্যান (স্প্যান ২-সি), ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বর পিলারের ওপর ৩৮তম স্প্যান (স্প্যান ১-এ), ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর  পিলারের ওপর ৩৯তম স্প্যান (স্প্যান ২-ডি), ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের ওপর ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) এবং সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (স্প্যান ২-এফ) বসবে আগামী ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর। এর ফলে আগামী ১০ ডিসেম্বরই পুরো সেতুটি দৃশ্যমান হবে।

অন্যদিকে, ৪১টি স্প্যানের ওপর দুই হাজার ৯১৭টি রোড স্ল্যাব বসানো হবে। এ পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার রোড স্ল্যাব। এ ছাড়া, রেললাইনের জন্য লাগবে দুই হাজার ৯৫৯টি রেল স্ল্যাব। এ পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৬০০ রেলওয়ে স্ল্যাব।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

আরও পড়ুন:

পদ্মা সেতুর ৩৩তম স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি চলছে

পদ্মা সেতুর ৪৮০০ মিটার দৃশ্যমান

Comments