সেই পাতো এখন বেকার
রূপকথার গল্পের মতো ক্যারিয়ারটা শুরু করেছিলেন। অভিষেকেই এমন একজনের রেকর্ড ভেঙেছিলেন যাকে বলা হয় ফুটবলের রাজা। কিংবদন্তি পেলের রেকর্ড ভেঙে শুরু। সে মৌসুমে এসি মিলানের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন। কিন্তু বাকীটা কেবল উল্টো পথে হাঁটার গল্প। সেই বিস্ময়কর প্রতিভা আলেকজান্দার পাতো এখন বেকার।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে টালমাটাল সারা বিশ্ব। বিশেষকরে ফুটবল ক্লাবগুলো বড় আর্থিক সংকটে ভুগছে। তাই মাঝপথেই পাতোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে সাও পাওলো। অথচ এক বছর আগে বেশ স্বপ্ন নিয়ে চীনের ক্লাব তিয়াজিন কুয়ানজিন থেকে দেশে ফিরেছিলেন পাতো। ভাগ্য এখন এতো মন্দ যে নতুন কোনো ক্লাবেও ডাক পাচ্ছেন না।
অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না পাতোর। যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে তাকে নিয়ে ক্লাবগুলোর কাড়াকাড়ি হওয়াটা ছিল স্বাভাবিক। ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিষেকে গোল করে পেলের গড়া ৫১ বছরের রেকর্ড ভেঙে দেন। ফিফার টুর্নামেন্টে সবচেয়ে কম বয়সে গোল দেওয়ার রেকর্ড নিজের করে নেন।
ক্লাব ক্যারিয়ারটাও ঈর্ষনীয়। ১৯ বছর বয়সেই এসি মিলানের মতো ক্লাবের সেরা গোলদাতা। তখন মিলানের ক্লাবটির সোনালী সময় যাচ্ছিল। ২৪ মিলিয়ন ইউরোতে ইন্টারন্যাশিওনাল থেকে তাকে কেনার আগের মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে ক্লাবটি। সেই ক্লাবে যোগ দেওয়ার দুই মৌসুমেই জায়গা পাকা।
কিন্তু এরপর যেন সব পাল্টে যায়। একের পর এক ইনজুরি প্রায় শেষ করে দেয় তার ক্যারিয়ার। ফলে নিয়মিত একাদশে জায়গা হারান। হারিয়ে ফেলেন তার ছন্দও। দুই বছর চোটের সঙ্গে লড়াই করে শেষে ২০১৩ সালে যোগ দেন করিন্থিয়ানসে। কিন্তু সাফল্য মিলেনি। পরে সাও পাওলো ঘুরে ২০১৬ সালে ফিরে আসেন ইউরোপে। চেলসির হয়ে ছয় মাসে মাত্র দুইটি ম্যাচে নামার সুযোগ পেলেন।
পরের ভিয়ারিয়ালে যোগ দেন। কিন্তু সেখানেও সুযোগ মিলছিল না ঠিকভাবে। চীনের ক্লাব তিয়াজিন কুয়ানজিনের কাছে বিক্রি করে দেয় ক্লাবটি। চীনে অবশ্য সময়টা ভালোই যাচ্ছিল পাতোর। ছন্দ ফিরে পেতে শুরু করেন। ৪৭ ম্যাচে গোল দেন ৩০টি। কিন্তু আরও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলতে ফিরে আসেন সাও পাওলোতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার এক বছর না যেতেই চুক্তি ভেঙে দেয় ক্লাবটি।
৩১ বছরেই ক্যারিয়ার শেষ না করে দিতে নতুন ক্লাব খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পাতো। এ বয়সে অনেকেই এখনও দাপটের সঙ্গে খেলে যাচ্ছেন। পাতো ইচ্ছা অবশ্য মিলানে ফিরে যাওয়া। গত এপ্রিলে গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 'আমি ইউরোপে ফিরে যেতে চাই। মিলানে হলে খুব ভালো হয়।'
চলতি মৌসুমে দারুণ খেলছে মিলান। ইব্রাহিমোভিচের নৈপুণ্যে সিরি আয় শীর্ষে আছে দলটি। তাই সে ক্লাবে জায়গা পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে যাবে তার জন্য। তবে স্পোর্টস ইতালিয়া জানিয়েছে, এরমধ্যেই জেনোয়া, স্পেজিয়া ও মোনজা তাকে পাওয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে।
Comments