ভাঙ্গার ইউএনওর গুলি করে শটগান পরীক্ষা, এলাকায় আতঙ্ক, পুলিশের জিডি

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুর রহমান খানের সরকারি বাসভবন থেকে গতকাল রবিবার রাতে পরপর চারটি গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি দেখতে ছুটে যায় পুলিশ।

জানা যায়, নিজের কেনা শটগানের পরীক্ষায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে চারটি গুলি ছোড়েন ইউএনও। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন বাদি হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গার ইউএনও রকিবুর রহমান জানান, দুই দিন আগে তিনি ঢাকার একটি অস্ত্রের দোকান থেকে একটি শটগান কিনেছিলেন। কিন্তু ওই দোকানে গুলি চালিয়ে পরীক্ষা করার জায়গা না থাকায় কেনার সময় পরীক্ষা করা যায়নি। এজন্য তিনি গতরাতে তার সরকারি ভবনের পুকুরের দিকে চারটি গুলি ছুড়ে পরীক্ষা চালান।

তবে দোকান থেকে পরীক্ষা না করে অস্ত্র কিনে এনে এভাবে পরীক্ষা করা কতটা আইনসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও ব্যবহার বিধিমালা ২০১৬ এর ২৯ (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘নতুন অস্ত্র ক্রয় ও মেরামতের সময়ে টেস্ট ফায়ারিং, আত্মরক্ষা ও টার্গেট প্রাকটিসের উদ্দেশ্যে গুলি ব্যবহার করা যাবে। টেস্ট ফায়ারিং এর জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি গুলি ব্যবহার করা যাবে।

২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪ এর নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন অস্ত্র কেনার সময় টেস্ট ফায়ারিং করা যাবে এবং বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র দেবে।

বিধি অনুযায়ী, অস্ত্র কিনে আনার আগে দোকানেই টেস্ট করতে হবে। বাড়িতে এনে টেস্ট ফায়ারিং এর সুযোগ নেই।

বিধিমালার ২৫ (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে অন্যের ভীতি/বিরক্তি উদ্রেক করতে পারে এমন করে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

ফরিদপুর জেলা রাইফেলস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অস্ত্র কেনার আগে সংশ্লিষ্ট দোকানেই পরীক্ষা করে কিনতে হয়। প্রতিটি অস্ত্রের দোকানে পরীক্ষা করার নির্ধারিত জায়গা থাকে। তাছাড়া যে অস্ত্র কিনবে তার ওই অস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। কেনার সময় টেস্ট ফায়ারসহ অস্ত্রের বিভিন্ন বিষয় দোকান থেকেই বুঝে নিতে হয়। বাইরে পরীক্ষা করার কোন নিয়ম নেই। বাইরে টেস্ট করা হলে তা আইনগতভাবে বৈধ হবে না।

ইউএনওর বাসভবন এলাকা থেকে পর পর চারটি গুলির শব্দ শুনে সাথে সাথে সেখানে ছুটে যান ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন।

তিনি বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গেলেও ইউএনওর সঙ্গে দেখা বা কথা বলতে পারেননি।

ইউএনওর বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মো. আমিনুর রহমানের সাথে তার কথা হয়েছে। আমিনুর রহমান তাকে জানিয়েছেন, ইউএনও শটগান থেকে পুকুরের পানিতে চারটি গুলি ছুড়েছেন।  

এসআই শওকত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানায় তিনি নিজে বাদি হয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।



ইউএনও রকিবুর রহমান খান জানান, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনে আছে, নতুন শটগান কিনলে টেস্ট করার জন্য ফাঁকা গুলি ছুড়তে পারি। আমি আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করিনি।’

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago