দুঃস্বপ্ন ভুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ শুরু বার্সেলোনার
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গত আসরের শেষটা দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে বার্সেলোনার। চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয় তারা। নতুন মৌসুমের শুরুতে লিওনেল মেসির দল ছাড়তে চাওয়া নিয়ে টালমাটাল ছিল দলটি। সবমিলিয়ে বেশ কোণঠাসা ছিল কাতালানরা। তবে নতুন মৌসুমটা বেশ দারুণভাবেই করেছে তারা। অপেক্ষাকৃত দুর্বল হাঙ্গেরির ক্লাব ফেরেঙ্কভারোসকে উড়িয়ে দিয়েই শুরু করেছে স্প্যানিশ ক্লাবটি।
ন্যু ক্যাম্পে মঙ্গলবার রাতে ফেরেঙ্কভারোসকে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় বার্সেলোনা। পাঁচটি গোল এসেছে পাঁচ জন ভিন্ন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে। লিওনেল মেসি, আনসু ফাতি, ফিলিপ কৌতিনহো, পেদ্রি ও ওসমান দেম্বেলে জালের দেখা পেয়েছেন। সফরকারীদের হয়ে একমাত্র গলটি করেন ইহর খারাতিন।
ঘরের মাঠে এদিন শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই খেলে স্বাগতিকরা। এগিয়ে যেতে পারতো ১৭তম মিনিটেই। আনসু ফাতির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে তার শট ফিরিয়ে দেন ফেরেঙ্কভারোস গোলরক্ষক দেনেস দিবুজ। ফিরতি বল ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন ফাতি। তবে ঠিকভাবে শট নিতে না পারায় নষ্ট হয় সে সুযোগ।
২০তম মিনিটে অবশ্য উল্টো গোল খেতে পারতো বার্সা। বড় বাঁচা বেঁচে যায় তারা। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইসাইলকে পাস দেন এনগুয়েন। বল ধরে বুলেট গতির শট নেন এ হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার। বার্সা গোলরক্ষক নেতোকে ফাঁকি দিতে পারলেও বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে এগিয়ে যেতে পারেনি সফরকারীরা।
তবে এর সাত মিনিট পর মেসির সফল স্পটকিক থেকে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সের মধ্যে মেসিকে ফাউল করছিলেন আন্দান কোভাচেভিচ। ফলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। নতুন মৌসুমে এ নিয়ে তিনটি গোল দিলেন মেসি। আর তিনটিই এসেছে পেনাল্টি থেকে।
৩৬তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন গোলরক্ষক দিবুজ। ত্রিনকাওর কাটব্যাক থেকে জোরালো এক শট নিয়েছিলেন ফাতি। তিন মিনিট পর আবারো অসাধারণ সেভ। মেসির বাড়ানো বলে একবারে ফাঁকায় থাকা ত্রিনকাওর শট ঠেকিয়ে দেন এ গোলরক্ষক। তবে ৪১তম মিনিটে আর আটকে রাখতে পারেননি তিনি। ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সা। ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বাড়ানো বলে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে আলতো টোকায় বল জালে পাঠান ফাতি।
বিরতির ছয় মিনিট যেতে ব্যবধান ৩-০ করে স্বাগতিকরা। ডি-বক্সে ফাতিকে কাটব্যাক করেছিলেন মেসি। বল ধরে ব্যাকহিল করে বাঁপ্রান্তে কৌতিনহোকে দেন ফাতি। নিখুঁত এক শটে জাল খুঁজে নেন এ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। ৬৭তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় বার্সা। ডি-বক্সের মধ্যে এনগুয়েনকে ফাউল করলে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জেরার্দ পিকে। পেনাল্টি পায় ফেরেঙ্কভারোস। আর সফল স্পটকিকে ব্যবধান কমান ইহর খারাতিন।
১০ জনের দল নিয়েও আক্রমণের ধার কমেনি বার্সার। ৮২ তম মিনিটে আবারও গোল পায় তারা। লক্ষ্যভেদ করেন বদলি খেলোয়াড় পেদ্রি। তবে গোলের মূল কারিগর আরেক বদলি খেলোয়াড় ওসমান দেম্বেলে। ডি-বক্সে ঢুকে তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে পেদ্রিকে দারুণ এক কাটব্যাক করেছিলেন তিনি। বল ধরে জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি পেদ্রোর।
৮৮তম মিনিটে গোল পেতে পারতো সফরকারীরাও। রবার্ট মার্কের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক নেতো। উল্টো পরের মিনিটে আরও একটি গোল পায় বার্সা। মেসির কাটব্যাক থেকে জোরালো শটে বল জালে পাঠান দেম্বেলে। ম্যাচের যোগ করা সময়ে মেসির ফ্রিকিক গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে না ঠেকালে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো।
Comments