‘কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে’ মেয়ে জামাইকে হত্যা, শ্বশুরসহ গ্রেপ্তার ৩
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মেয়ে জামাইকে হত্যার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. মইনুল হাসান তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে আনোয়ার তার মেয়ে জামাইকে ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে হত্যা করিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল বরগুনার আমতলী উপজেলা থেকে ভাড়াটে খুনি নিজাম ওরফে মিজান (৪৫) ও তার সহযোগী বরগুনার সদর উপজেলা থেকে আমজেদকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ ভোররাতে পটুয়াখালী শহরের কলাতলা এলাকা থেকে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজান সম্পর্কে আনোয়ারের আত্মীয়। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মিজান একাধিবার কারাভোগও করেছেন।’
গত ২১ অক্টোবর হত্যার শিকার হন আমিনুল ইসলাম গাজী ওরফে দীলিপ গাজী। তার বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের নাওয়াপাড়া গ্রামে। উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক জমির মালিক হলেও দীর্ঘদিন থেকে তিনি কাতারে বসবাস করছিলেন। করোনার কারণে দীলিপ দেশে ফিরে আসেন। কাতারে থাকতে তার পাঠানো টাকায় আনোয়ার যৌথ মালিকায় কিছু জমি কেনন। পায়রা বন্দরের জন্য সেসব জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সেই টাকা গ্রহণ করে আনোয়ার অর্ধেক অংশ দীলিপের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেন। দীলিপের অ্যাকাউন্টে প্রায় এক কোটি টাকা জমা হয়।
ওই অ্যাকাউন্টের নোমিনি আনোয়ারের বড় মেয়ে। কৌশলে জামাইয়ের কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে আনোয়ার হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী, দুই লাখ টাকায় মিজান ও আমজেদের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঈদুল আজহার সময় মেয়ে ও তিন নাতিকে বাড়িতে নিয়ে আসার পরে আর যেতে দেননি।
গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় মিজান ও আমজেদ একটি সেভেন আপের বোতলে ছয়টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দীলিপের বাড়ি যান এবং অনেকটা জোর করে তাকে সেভেন আপ খাওয়ান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে দীলিপ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মিজান ও আমজেদ। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন দীলিপের স্ত্রী হাবিবা বেগম বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা করেন।
Comments