সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কিনে দেশের সব নাগরিকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কিনে দেশের সব নাগরিকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভ্যাকসিন কিনে ফেলবে সরকার। বিদ্যমান বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচির মতোই এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে।

ভ্যাকসিন ক্রয়, মজুদ, পরিবহন ও বিতরণ করতে চারটি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইতিমধ্যে দুই বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এআইডিবি এবং জাইকার প্রত্যেকের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার করে চেয়ে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া চিঠিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, সরকার নিজস্ব খরচে ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, এ বছরের শেষের দিকে বৃহৎ পরিমাণে ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে উন্নয়ন অংশীদারদের কাছে দুই বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। কতটা পাব তা এখনও নিশ্চিত নই। যে পরিমাণ অর্থই পাই, তার সঙ্গে বাকি যা প্রয়োজন হবে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হবে।’

কোভিড-১৯ এর জরুরি প্রয়োজনে চিকিত্সা সামগ্রী সংগ্রহের জন্য এ বছরের বাজেটে ১২ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও যোগ করেছেন এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, ভ্যাকসিন কেনা হয়ে গেলে হাম, পোলিও এবং ডিপথেরিয়া প্রতিরোধে বিদ্যমান টিকাদান কর্মসূচির মতো করোনার ভ্যাকসিনও বিনামূল্যে বিতরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আনুমানিক হিসেবে দেখা যায় যে বাংলাদেশের সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যাকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে এক দশমিক ৬৫ থেকে দুই বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। জনপ্রতি দুই ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন হতে পারে, যার জন্য ১০ থেকে ১২ ডলার খরচ হতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিনামূল্যেই দেওয়া উচিত।’

তিনি জানান, সরকারের নীতিমালা অনুসারে এগুলো দেওয়া হবে, যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের জনসংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যার দিক থেকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।’

মানব শরীরে নিরাপদ ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম পরীক্ষা গত মার্চে শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ছয়টি প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ভ্যাকসিন সীমিত আকারে ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। ২৪ অক্টোবরের মধ্যে আরও অন্তত ১২টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানা যায় নিউইয়র্ক টাইমস করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন ট্র্যাকার থেকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য কোনও দেশের সঙ্গে সরকার চুক্তি না করলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন যে তারা পাঁচটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

কোভ্যাক্সের অধীনে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দ্রুত, সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিতের চেষ্টা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর অধীনে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের ২০ শতাংশ পেতে পারে।

২০২১ সালের মধ্যে ১৭০টির বেশি দেশে দুই বিলিয়ন ডোজের বেশি ভ্যাকসিন বিতরণের লক্ষ্যে কাজ করছে কোভ্যাক্স।

Comments

The Daily Star  | English

Police see dead man running

Amin Uddin Mollah is dead and buried for two years and 10 months.

7h ago