নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন: সাকিবের হারানো-না হারানো খেলার টাইমলাইন
এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে যাচ্ছে আজ। ক্রিকেট খেলতে না পারা, ক্রিকেট মাঠে যেতে না পারার দুঃসহ সময় পেরিয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) মুক্ত হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। শাস্তির এই এক বছর কতটা মাঠের ক্রিকেট মিস করেছেন বাংলাদেশের সেরা তারকা? করোনাভাইরাস পরিস্থিতি না থাকলে আরও কতটা মিস হতো?
যা মিস করেছেন সাকিব
ভারত সফর
২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ার পর পরই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ভারতে যায় বাংলাদেশ দল। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিবের এমন খবরে লাগে বিশাল ধাক্কা। মুমিনুল হককে টেস্ট ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দেওয়া হয় টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব।
নভেম্বরে ভারতের মাঠে টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সিরিজ হারলেও করতে পেরেছিল লড়াই। কিন্তু সাকিববিহীন দুই টেস্টের ফল হয়েছে যাচ্ছেতাই।
পাকিস্তান সফর
নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান সফরে যাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় সেখানে দুই দফায় যায় বাংলাদেশ। জানুয়ারিতে প্রথমে খেলে আসে দুই টি-টোয়েন্টি। ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে খেলে এক টেস্ট। সাকিবকে ছাড়া একদমই ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ
পাকিস্তান থেকে ফিরে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট দিয়ে শুরু হয় সিরিজ। তাতে দাপটেই জিতে মুমিনুল হকরা। মার্চে তিন ওয়ানডের সিরিজেও ছিল বাংলাদেশের দাপট। এই সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। পরে দুই টি-টোয়েন্টিতেও সাকিবকে ছাড়া বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে পাত্তা দেয়নি।
এরপরই শুরু করোনা বিরতি। বন্ধ থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের কিছু ম্যাচের পর হয়নি ঘরোয়া কোনো খেলাও। তবে সাকিব খেলতে পারেননি সর্বশেষ বিপিএল। এছাড়া চলমান আইপিএলও তার মিসের তালিকায় ফেলা যায়।
করোনাভাইরাস না হলে আরও যা মিস করতেন সাকিব
করোনাভাইরাস মহামারি পৃথিবীতে না এলে অনেকগুলো খেলা মিস হয়ে যেত সাকিবের। কারণ, চলতি বছরে দেশে ও দেশের বাইরে ছিল ব্যস্ত সূচি।
পাকিস্তান সফরের বাকি অংশ
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন দফার একটি সিরিজের সূচি ঠিক করা হয়েছিল। প্রথম দুই দফার পর এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় টেস্ট ও একটি ওয়ানডে খেলা চূড়ান্ত হয়েছিল। করোনায় যা ভেস্তে গেছে।
আয়ারল্যান্ড সফর
মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যুক্তরাজ্য সফর করার কথা ছিল বাংলাদেশের। সফরটি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্যই পিছিয়ে যায়।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
জুন মাসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। করোনার প্রকোপ তখন ছিল অনেক বেশি। অনুমিতভাবেই সিরিজটি স্থগিত করা হয়।
শ্রীলঙ্কা সফর
জুলাই মাসেই শ্রীলঙ্কায় গিয়ে তিন টেস্ট খেলবার কথা ছিল বাংলাদেশের। সফরটিও সঙ্গত কারণে স্থগিতের খাতায় চলে যায়। তবে এই সফর চলতি অক্টোবরের শেষ দিকে করার পরিকল্পনা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। যার বড় একটি অংশে খেলতেন সাকিবও। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কোভিড-১৯ প্রোটোকল নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় তা আর হয়নি।
নিউজিল্যান্ড সফর
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার সূচি ছিল বাংলাদেশের। পিছিয়ে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তা অনুষ্ঠিত হতো। তবে গেল অগাস্টে সিরিজ স্থগিত করে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। ইতোমধ্যে নতুন সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী মার্চে দ্বীপদেশটিতে যাবে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
করোনার কারণে পিছিয়ে যায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও। অক্টোবরে শুরুর দিকে সূচি থাকা এই বিশ্ব আসরের সাকিবের খেলার সম্ভাবনা ছিল ক্ষীণ। বাংলাদেশের খেলা ছিল অক্টোবরের মাঝামাঝি। তখন সাকিব নিষিদ্ধই থাকতেন। বাংলাদেশ পরের রাউন্ডে গেলে তিনি খেলতে পারতেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল আগেভাগে দিতে হওয়ায় সেটাও কীভাবে হতো তা ছিল বড় প্রশ্নের।
অর্থাৎ গেল এক বছরে সাকিবের যতটা খেলা মিস হয়েছে, তার চেয়ে বেশি মিস হতে পারত। সেদিক থেকে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতেই পারেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার!
Comments