বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে সহযোগিতার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে আর্তমানবতার সেবায় জনগণ এবং সরকারের সহযোগী হিসেবে করোনার কারণে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার আওতায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রদেয় ঋণ কর্মসূচিতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যাংক দিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকগুলোও যদি এগিয়ে আসে তাহলে শুরুতে হয়তো একটু সমস্যা হবে। তবে, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি শুরু হয়ে যায় তবে সেরকারি ব্যাংকগুলোও লাভবান হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজে আমরা যেসব সুযোগ দিয়েছি তাতে অল্প সুদে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তার একটি উদ্যোগ আছে। তবে, এ ব্যাপারে আমি মনে করি, আমাদের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আরেকটু আন্তরিক হওয়ার দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যেহেতু প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাশে দাঁড়ান, আমি বলবো, এক্ষেত্রেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দুপুরে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
৩৫টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংগঠন বিএনবি’র পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে আসন্ন শীত মওসুম উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ২৫ লাখ ৯৫ হাজার পিস কম্বল প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এই অনুদান গ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা ব্যাংক এসোসিয়েশনের এই সহযোগিতাকে ‘বদান্যতা’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘যখনই দেশে কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাক দেখা দেয় তখনই বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) নেতৃবৃন্দ মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের এই বদান্যতার কারণে আমরা মানুষকে অনেক সহযোগিতা করতে পারি।’
তিনি বলেন, এবার যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে শীতের সময় এর প্রকোপটাও বেশি হতে পারে। সেজন্য শীত আসার আগেই বিএবি নেতৃবৃন্দ কিছু শীতবস্ত্র তথা কম্বল দেয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। কারণ, মানুষের কাছে আমরা এটা পৌঁছতে পারবো এবং শীতে মানুষের উপকার হবে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব কিছুতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী স্থবিরতা নেমে আসার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের সাহস ও মনোবলের প্রশংসা করেন এবং করোনা মোকাবেলায় তার সরকারের সময়োচিত ও যথাযথ উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে কাজ করছি। কাজেই যেকোন দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবেলা করার মতো বাংলাদেশের মানুষের মনোবল আছে এবং সাহস আছে।’
তিনি বলেন, ‘সেই সাহসিকতা নিয়েই এ দেশের মানুষ চলে, যে কারণে এই করোনাভাইরাস থাকার পরেও আমাদের অর্থনীতির চাকাকে আমরা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া, আমরা যে প্রণোদনাটা দিয়েছি তাতে সকলেই ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার মত প্রণোদনা পেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশের মত প্রণোদনা দিয়েছি। সেটা ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষ এবং সাধারণকে অন্তর্ভূক্ত করে করা হয়েছে। যার ফলে কিছুটা হলেও মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।’
Comments