২০২০ বাংলা সিনেমার জন্য ভয়ংকর!

২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত পাঁচটি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাগুলো হলো— জয় নগরের জমিদার, গণ্ডি, বীর, হলুদবনি ও শাহেনশাহ। সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা ছাড়া বাকিগুলো তেমন ব্যবসা সফলতা পায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বীর ও গণ্ডি সিনেমার পোস্টার।

২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত পাঁচটি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাগুলো হলো— জয় নগরের জমিদার, গণ্ডি, বীর, হলুদবনি ও শাহেনশাহ। সিনেমাগুলোর মধ্যে একটা ছাড়া বাকিগুলো তেমন ব্যবসা সফলতা পায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এরপরেই শুরু হলো করোনা মহামারির প্রকোপ। থমকে গেলো সারা বিশ্ব। দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৬ অক্টোবর খুলেছে সিনেমা হল। পাশাপাশি ২৩ অক্টোবর থেকে খুলেছে মাল্টিপ্লেক্সগুলোও। সবকিছু খুললেও বড় বাজেটের নতুন সিনেমাগুলো এখনো মুক্তি দেননি পরিচালক, প্রযোজকরা।

মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সেই সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে— বিদ্রোহী, মিশন এক্সট্রিম, বিশ্ব সুন্দরী, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু, মিশন এক্সট্রিম টু, শান, পরান, বিক্ষোভ, মেকআপ, জ্বিন, ওস্তাদ, ক্যাসিনো, আনন্দ অশ্রুসহ আরও কিছু। এরই মধ্যে ২৩ অক্টোবর শুধু মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে মুক্তি পেয়েছে মাসুদ হাসান উজ্জ্বল পরিচালিত সিনেমা ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’। এর আগের সপ্তাহে ১৬ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছিল ‘সাহসী হিরো আলম’ নামে একটি সিনেমা। সেটি খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে এসব সিনেমা হলে চলছে পুরনো বাংলা সিনেমা।

চলতি বছরের ১০ মাস পেরিয়েছে, সামনে আরও দুই মাস বাকি। ২০১৯ সালে মোট ৪১টি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। এবার সেই সংখ্যা হয়তো ১০টায় এসে দাঁড়াবে। আগামী দুই মাসে নতুন মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা সিনেমাগুলোর মধ্যে দুই-একটা যদি মুক্তির পর ব্যবসা সফল না হয়, তাহলে বাংলা চলচ্চিত্র একেবারেই মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমানে বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ৬০-৭০টি। উৎসবগুলোতে বেড়ে এর সংখ্যা ৯০’র কাছাকাছি দাঁড়ায়। কয়েক বছর আগে দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল দুই শর বেশি। নব্বই দশকে বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৩৫। কমতে কমতে বর্তমানে সেই সংখ্যা ৬০ এর ঘরে এসে ঠেকেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে হলের সংখ্যা আরও কমে আসবে। অনেকেই হয়তো বলবেন ওটিটি, নেটফ্লিক্সসহ অনেক মাধ্যমের কথা। কিন্তু, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলা সিনেমার দর্শকদের এসবে অভ্যস্ত করতে আরও সময়ের প্রয়োজন।

চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করার কথা বলেছে সরকার। বন্ধ সিনেমা হল চালু, সংস্কার ও নতুন হল তৈরির জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে এই তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই বলছেন, শুধু সিনেমা হল সংস্কার হলে কী চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে? ভালো ভালো সিনেমা নির্মাণের পাশাপাশি সমগ্র চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এমনিতেই ২০২০ সাল সিনেমার জন্য ভয়ংকর একটা বছর। সবকিছু থেকে উত্তরণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তারা।

Comments