জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার আরও ৫
পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) হত্যার ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত একটা থেকে আজ ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে এ ঘটনায় পাঁচ এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদেরর সবার বাড়ি পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী গ্রামে।
নতুন গ্রেপ্তার পাঁজ জনের মধ্যে তিন জন এজাহার নামীয় আসামি এবং দুজনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি সুমন কুমার মোহন্ত।
অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি ওসি।
ওসি আরও জানান, মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন আজ সোমবার দুপুরে তদন্ত টিমের কাছে তাদের লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। তবে, মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
মসজিদের ইমাম সৈয়দ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি এসে দেখি মসজিদের বাইরে দুই ব্যক্তিকে হোসেন ডেকোরেটরের মালিক হোসেন আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন পিটাচ্ছিলো। মসজিদের ভেতর পবিত্র কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি। জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারনা নেই।’
মসজিদের মুয়াজ্জিন আফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি নিহত জুয়েলকে মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীর সঙ্গে কথা বলতে দেখেছিলেন। খাদেমের সঙ্গে কি কথা হয়েছিল এবং কি ঘটনা ঘটেছিল তা আমার জানা নেই। জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার সময় আমি মসজিদের ভেতর ছিলাম।’
স্থানীয় একাধিক সূত্র, পুলিশ ও তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, মসজিদের পাশে বাজার আছে। ওই বাজারের হোসেন ডেকোরেটরের মালিক হোসেন আলীর মাধ্যমে প্রথমে পবিত্র কোরআন অবমাননার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, মসজিদের ভেতর ঢুকে পবিত্র কোরআন অবমাননা করেছে অজ্ঞাত লোকটি। এই গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ জড়ো হয়ে যায়। ঘটনার পরদিন শুক্রবার থেকে ডেকোরেটরের দোকান বন্ধ করে পলাতক আছেন হোসেন আলী।
আরও পড়ুন:
জুয়েল হত্যা: গ্রেপ্তার ৫ আসামির রিমান্ড আবেদন শুনানি আজ
জুয়েলের মরদেহের অপেক্ষায় শোকার্ত পরিবার
কোরআন অবমাননার প্রমাণ পায়নি মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি
Comments