মার্কিন নির্বাচনের ফল নির্ধারণ হবে আদালতে?

কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত হওয়ার লড়াই আদালত পর্যন্ত গড়ানোর বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।
US election
ভোট শুরুর আগে সবাইকে খালি বাক্স দেখানো হচ্ছে। ৩ নভেম্বর ২০২০। ছবি: রয়টার্স

কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত হওয়ার লড়াই আদালত পর্যন্ত গড়ানোর বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে আদালতে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।

জনমত জরিপে পিছিয়ে থাকা ট্রাম্প শুরু থেকেই ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট ভোটের বিরোধিতা করে আসছেন।

গতকাল সোমবার গণমাধ্যমকে তিনি জানান, মঙ্গলবার নির্বাচনের পরের দিনও যদি রাজ্যগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন তা পরিষ্কার না হয় তবে তিনি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী নিয়োগ করবেন।

সেদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পেনসিলভেনিয়ায় ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট গণনার যে পরিকল্পনা রয়েছে তাতে তিন দিন পর্যন্ত ভোট গণনা চলতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যাপক প্রতারণা হতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রে ভোট গণনা করতে কয়েক দিন বা এমনকি কয়েক সপ্তাহ সময় নেওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। এ বছর করোনা মহামারির কারণে গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগাম ভোটের রেকর্ড হয়েছে। ফলে ভোট গণনার প্রক্রিয়াটি এ বছর আরও দীর্ঘ হতে পারে।

এদিকে, ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট ভোটে কারচুপি হতে পারে বলে ট্রাম্প ও বাইডেন— উভয়েরই নির্বাচনী শিবির থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এর আগে জো বাইডেন ‘রাতের মধ্যেই বিজয়ের ঘোষণা আসবে’ বলে মন্তব্য করলেও গতকাল সোমবার তিনি পিটসবার্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি একটি সুস্পষ্ট, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি, যেখানে প্রচুর লোকের অংশগ্রহণ থাকবে।’

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার ব্যবস্থাপক জেনিফার ও’ম্যালি ডিলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচনের রাতেই বিজয়ী ঘোষণা করা সম্ভব না।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, একটিও ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ অঙ্গরাজ্যের ফলাফল যদি সমান-সমান বা অল্প পার্থক্য হয়, সেক্ষেত্রে হয়তো উভয় পক্ষই আদালতের দ্বারস্থ হবেন। দুই পক্ষেরই আদালতে অনেক আইনজীবী রয়েছেন যারা নির্বাচন-পরবর্তী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৪০ বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে মাত্র এক বার আদালত চূড়ান্ত প্রেসিডেন্ট নির্ধারণ করে দেন। ২০০০ সালে আদালতের হস্তক্ষেপে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী আল গোরকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ ‍বুশ। সেবছর আল গোর ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ভোট পুনঃগণনার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন।

এদিকে, ব্যালট নিয়ে এই আইনি লড়াইয়ের মতো ভোটের লড়াইও আদালত পর্যন্ত গড়ানোর আভাস আগেভাগেই দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এবারের নির্বাচনে বিজয়ী না হলে ১৯৯২ সালের পর ট্রাম্পই হবেন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে না পারা প্রথম ব্যক্তি। এর আগে ১৯৯২ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছিল।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনার কারণে এবার বেশিরভাগ জরিপেই ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন জো বাইডেন। তবে, গতবারের মতো ইলেকটোরাল কলেজে ২৭০টি ভোট নিয়ে আবারো প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

অন্যদিকে, ভোটের লড়াই আদালত পর্যন্ত গড়ালে সেখানেও নিশ্চিতভাবে ট্রাম্পই এগিয়ে থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির মধ্যে ৬-৩ ব্যবধানে রক্ষণশীলরা এগিযে রয়েছেন।

সর্বশেষ গত ২৬ অক্টোবর ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী এমি কনি ব্যারেটের নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে দ্বিগুণ ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন রক্ষণশীলরা। এই ছয় জনের মধ্যে তিনজনকেই নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প।

Comments

The Daily Star  | English
BTCL Logo

BTCL’s Tk 463Cr 5G Project: Huawei’s win marred by controversy

It is often said that government files move at a snail’s pace in Bangladesh, slowing down the speed of project implementation.

11h ago