৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ঘোষণার দাবি

Nirmul_Commity.jpg
ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধান পুনঃপ্রবর্তন এবং ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

গতকাল বুধবার ৪৯তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবইনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এই দাবি জানান। আলোচনার বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ১৯৭২-এর সংবিধান’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় আইন সহায়ক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল মান্নান।

আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম আমিনউদ্দীন, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হীরু, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় আইন সহায়ক কমিটির সভাপতি আজাহার উল্লাহ ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, নির্মূল কমিটি মানিকগঞ্জ শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপক ঘোষ, কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদুল শিকদার, ফ্রান্স শাখার আহ্বায়ক চলচ্চিত্রনির্মাতা প্রকাশ রায়, অস্ট্রেলিয়া শাখার সহসভাপতি হাসনাত ফারুক শিমুল রবিন, নির্মূল কমিটি আইন সহায়ক কমিটির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু এবং ঠাকুরগাঁও শাখার সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী সুচরিতা দেব।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও দর্শনের প্রতিফলন হচ্ছে ১৯৭২ এর সংবিধান। বঙ্গবন্ধু এ ধরনের সংবিধানের গুরুত্ব অনুভব করেছেন স্বাধীনতাপূর্ব তার ২৪ বছরের সংগ্রামমুখর রাজনৈতিক জীবনে। স্বাধীন বাংলার মাটিতে বসে যে সংবিধান তিনি জাতিকে উপহার দিয়েছেন তার কোনো তুলনা নেই। ৪ নভেম্বরের ভাষণে বঙ্গবন্ধু আমাদের সংবিধানের চার মূলনীতি অত্যন্ত সহজ ও সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এই চার মূলনীতি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল দর্শন। আজ যখন আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি তখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে বঙ্গবন্ধুর দর্শনের বাস্তবায়ন।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জেনারেল জিয়া ও এরশাদসহ সব সামরিক শাসকদের শাসন অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন। সুতরাং জেনারেল জিয়া পঞ্চম সংশোধনী এবং জেনারেল এরশাদ সংবিধানে সপ্তম ও অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ এর সংবিধানের মূলনীতির মৌলিক পরিবর্তন করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।’

বক্তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং তার আদর্শের মূর্তরূপ ১৯৭২ এর সংবিধানের হত্যাকারীরা বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে এখনো সক্রিয়। যে কারণে আমরা ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।’

তারা বলেন, ‘রাষ্ট্রের চার মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ; যা ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূর্ত রূপ। এই চার নীতি অন্য অনেক আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধানে থাকলেও ১৯৭২ এর ৪ নভেম্বর গৃহীত বাংলাদেশের মূল সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে নিশ্চিত করার জন্য ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল ধর্মের দোহাই দিয়ে।’

এ সময় বক্তারা ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ঘোষণার দাবি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Govt to review media outlets owned by AL ministers, MPs

The adviser made these remarks during a stakeholders' meeting of the Department of Films and Publications

2h ago