‘বার্সায় চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে মেসিকে বেতন কমাতে হবে’
ঋণের বোঝা বইতে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে লিওনেল মেসির চুক্তির মেয়াদের ইতি ঘটছে চলতি মৌসুমের শেষে। চুক্তি নবায়ন করা নিয়ে অবশ্য অগ্রগতির কোনো খবর নেই। তাছাড়া, কয়েক মাস আগে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বার্সা ছাড়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। দোদুল্যমান এই পরিস্থিতির মাঝে মেসিকে এক রকম হুঁশিয়ারি দিলেন টনি ফ্রেইজা। বার্সার সভাপতি হওয়ার দৌড়ে থাকা এই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ৩৩ বছর বয়সী তারকাকে তার বর্তমান বেতনে ধরে রাখার সামর্থ্য নেই ক্লাবটির।
গত মাসে বার্সেলোনার সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন ৫৭ বছর বয়সী ব্যবসায়ী জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। তার সঙ্গে স্প্যানিশ দলটির বোর্ডের বাকি পরিচালকরাও পদত্যাগ করেন। বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে একরকম বাধ্য হয়েই সরে দাঁড়ান তিনি। বর্তমানে কার্লোস তুতকেতসের নেতৃত্বে একটি পরিচালনা পরিষদের অধীনে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বার্সা। আগামী বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে বার্তোমেউয়ের উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার নির্বাচন। সেখানে ফ্রেইজা অন্যতম প্রার্থী।
সম্প্রতি এক কুরুবিতোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রেইজা বলেছেন, যদিও তিনি মেসিকে ধরে রাখতে আগ্রহী, কিন্তু বর্তমান চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে হলে অবশ্যই তাকে বেতন কমাতে হবে, ‘মেসির সঙ্গে সামনাসামনি বসে শান্তভাবে আমাদের আলোচনা করতে হবে, বার্সেলোনার সর্বোচ্চ স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখে। মেসিসহ অন্য যে সকল খেলোয়াড়দের চুক্তি নবায়ন করতে হবে কিংবা কিনতে হবে, তাদের সবাইকে আমরা এমন প্রস্তাব দিব, যার সঙ্গে এত দিন ধরে পাওয়া বেতনের মিল থাকবে না।’
‘মেসির মন জয় করা কিংবা তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে রাজী করানোর দরকার নেই। তার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে এবং জানতে হবে দুই পক্ষ কী চায়। সে কী চায় এবং বার্সেলোনা কী চায়। আমরা মনে করি, ফুটবলকে মেসির আরও অনেক কিছু দেওয়ার বাকি।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বার্সেলোনা। তাদের দশা কল্পনাতীত করুণ। বিশাল ঘাটতি পোষাতে খেলোয়াড়দের বেতন ব্যাপক আকারে কমাতে হবে তাদেরকে। নইলে আগামী জানুয়ারিতে দেউলিয়াও হয়ে যেতে পারে ক্লাবটি!
বর্তমানে ৭০ কোটি পাউন্ডেরও অধিক দেনা রয়েছে বার্সার। দলটির খরচের সিংহভাগ ফুটবলারদের বেতন-ভাতায় ব্যয় হয়। তাই পারিশ্রমিক বাবদ তারা যে ১০০ কোটি পাউন্ড খরচ করে, তাতে লাগাম টানতে চাইছে কাতালানরা। সবমিলিয়ে ১৭ কোটি পাউন্ডের কিছু বেশি পরিমাণ অর্থ বাঁচাতে হবে তাদেরকে। এই লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবটির সব খেলোয়াড়কে বেতনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ কমাতে হবে।
আর্থিক অস্বচ্ছলতা এড়ানোর প্রথম ধাপ হিসেবে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয় একটি বৈঠক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বার্সেলোনার আইনজীবী এবং মূল দল ও ‘বি’ দলের ফুটবলাররা। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, আসেনি কোনো সমঝোতার বার্তা। ক্লাব কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে সায় দেননি অধিকাংশ খেলোয়াড়। পরবর্তীতে তুতকেতস অবশ্য জানিয়েছেন, বেতন কমানো নিয়ে লিওনেল মেসি-আঁতোয়ান গ্রিজমানদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
Comments