কালজয়ী গানের উজ্জ্বল কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বারের জন্মদিন
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তার ছিল অনন্য ভূমিকা। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার। কিংবদন্তি এই শিল্পীর আজ ৮২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা যোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন আব্দুল জব্বার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অনেক দেশাত্মবোধক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ এবং ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলায় শ্রোতা জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল।
১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সঙ্গম’ ছবির গানে প্রথম কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই বছর ‘পীচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ ও ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো’ গান দুটি তাকে এনে দেয় আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ও..রে নীল দরিয়া’ গানটি তার কণ্ঠে গাওয়া কালজয়ী এক গান।
কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাংলা গানে অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে ‘একুশে পদক’ ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন কালজয়ী বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার।
Comments