শীত নামবে নভেম্বরের শেষে

ছবি: অনুরূপ কান্তি দাস

মৌসুমী বায়ু দেরিতে বিদায় নেওয়ায় এ বছর শীত নামতে দেরি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের উত্তরাঞ্চলে শীত অনুভূত হলেও নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে গিয়ে পুরোপুরি শীত নামবে।

আজ রোববার আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাধারণত অক্টোবরের মাঝামাঝিতে মৌসুমী বায়ু বিদায় নেয়। এবার কিছুটা দেরিতে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে মৌসুমী বায়ু বিদায় নিয়েছে। যে কারণে শীত আসতে দেরি হচ্ছে। সাধারণত দক্ষিণমুখী বাতাস উত্তরে ঘুরে গেলে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত অনুভূত হয়। পরে ধীরে ধীরে সারা দেশে শীতের আমেজ আসে। এবার আকাশে প্রচুর মেঘ ছিল। অনেক বৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় মনে হচ্ছিল শীত এসে গেছে।’

‘কিন্তু ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা বাড়বে। এখন সাইক্লোন মৌসুম। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপে নিতে পারে। তেমন হলে হঠাৎ তাপমাত্রা নেমে যাবে। এ ছাড়া, দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। এ মাসে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। নভেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। মাসজুড়ে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে’— বলেন বজলুর রশীদ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অক্টোবরে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিক, রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম এবং অন্যান্য বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১ অক্টোবর উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। ৪ অক্টোবর এটি উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান নেয়। ৬ অক্টোবর লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ৯ অক্টোবর উত্তর আন্দামান সাগর ও এর পাশের এলাকায় আরেকটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। ১০ অক্টোবর পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ১১ অক্টোবর এটি প্রথমে নিম্নচাপে এবং পরে আরও ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়।

এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে এগিয়ে ১৩ অক্টোবর ভারতের উত্তর অন্ধ্র উপকূল পার হয়ে স্থল নিম্নচাপ আকারে তেলাঙ্গানা এলাকায় অবস্থান নেয়। ২০ অক্টোবর মধ্যবঙ্গোপসাগর ও এর পাশের এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। পরদিন এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। ২২ অক্টোবর এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়। ২৩ অক্টোবর উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় স্থল নিম্নচাপ আকারে গভীর নিম্নচাপটি ফরিদপুর-মাদারীপুর অঞ্চলে অবস্থান নেয়। এরপর আরও উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে স্থল নিম্নচাপ আকারে প্রথমে মানিকগঞ্জ এবং পরবর্তীতে গাজীপুরে দুর্বল হয়ে পড়ে।

এর প্রভাবে ২৩ ও ২৪ অক্টোবর ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়। এ ছাড়া, সারা দেশেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ২২ অক্টোবর খেপুপাড়ায় দৈনিক সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ২৫৪ মি.মি. রেকর্ড করা হয়। পুরো মাসে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে এক দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

১১ অক্টোবর চাঁদপুরে এবং ১৭ অক্টোবর চাঁদপুর ও ময়মনসিংহে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ৩১ অক্টোবর তেঁতুলিয়ায় ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Comments

The Daily Star  | English
NCP protest rally for election commission reform

NCP to hold protest rally in front of EC demanding its reconstitution

Calls on govt to hold local elections without delay

1h ago