নারীদের ভোটে বাইডেনের জয়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচনা চলেছে, কে জিতবেন। সেই জল্পনা-কল্পনা আর আলোচনার সমাপ্তি ঘটিয়ে পপুলার এবং ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে জয় পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। তার এই বিজয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান মার্কিন নারীদের।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচনা চলেছে, কে জিতবেন। সেই জল্পনা-কল্পনা আর আলোচনার সমাপ্তি ঘটিয়ে পপুলার এবং ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে জয় পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। তার এই বিজয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান মার্কিন নারীদের।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও এনবিসি নিউজের এক যৌথ টেলিফোন জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছেন ৩৫ শতাংশ নারী এবং ৫০ শতাংশ পুরুষ। যেখানে বাইডেনের পক্ষে রায় নিয়েছেন ৪৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৫৮ শতাংশ নারী।

সেন্টার ফর আমেরিকান ওমেন এন্ড পলিটিক্সের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পত্রিকার বরাত দিয়ে নারী ও পুরুষ ভোটারদের পছন্দের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। সেখানেও চিত্রটি প্রায় একই।

শুধু এবারের নির্বাচনেই নয়, বারাক ওবামা এমনকি ট্রাম্পের বর্তমান মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পেছনেও ছিল নারী ভোটারদের বড় ভূমিকা।

সম্প্রতি প্রকাশিত ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে শুরু করে ভোটের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পছন্দের এই পার্থক্য চার থেকে ১০ পয়েন্টের মধ্যে ছিল। যদিও ১৯৯৬ এবং ২০১৬ সালে এই পয়েন্ট হয়ে যায় ১১।

অ্যারিজোয়ানা অঙ্গরাজ্যের মারিকোপা কাউন্টির রিপাবলিকান কনসালটেন্ট লরনা রোমেরো জানান, রিপাবলিকান হিসেবে রেজিস্টার্ড নারীদের একটি বড় অংশের ভোট হারিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘এটা একজন প্রেসিডেন্টের আচরণ হতে পারে না। আমাদের নারীদের দিকে তাকান, তাদের অনেকেই সন্তানের মা। কমান্ডার-ইন-চিফের কাছ থেকে তারা এমন আচরণ প্রত্যাশা করেন না।’

প্রায় ১০০ বছর আগে ভোটাধিকার পাওয়া নারীরা ১৯২০ সালে তেমন বেশি ভোটই দিতে যাননি। মার্কিন নারীরা ১৯৮০ সালের পর থেকে ভোট দেওয়ার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক ডিপ্লাও গোউল্ড বলেন, ‘এখন নারীরাই ভোটের মাঠের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করেন।’

বেশ কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নিয়ে মার্কিন পরিবারে নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রার্থী পছন্দের স্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরেছে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস। তাদের মধ্যে উডার্ড হার্টলি নামের একজন মার্কিন নারী ভোটার বলেন, ‘আমরা (স্বামী-স্ত্রী) বাড়িতে রাজনীতি নিয়ে আর আলোচনা করি না, ঝগড়া বেঁধে যায়।’ হার্টলির মতো তার স্বামীও রেজিস্টার্ড ডেমোক্রেট সমর্থক। তবুও এবারের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পছন্দের পার্থক্য তুলনামূলকভাবে নতুন। গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা ১৯৬০ সাল পর্যন্ত পুরুষদের পছন্দের মতোই ভোট দিতেন। প্রথম ব্যবধান চোখে পড়ে ১৯৮০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রোনাল্ড রিগ্যান গর্ভপাত বিরোধী অবস্থানে দাঁড়ান। পুরুষরা রিগ্যানকে সমর্থন করলেও ভাগ হয়ে যায় নারীদের ভোট। নারীদের ভোট সমান ভাগে বিভক্ত হয় রিগ্যান এবং ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মধ্যে। এতে করে ভোটের হিসেবে আট শতাংশ পয়েন্টের লিঙ্গ ব্যবধান তৈরি হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

7h ago